রাজ্যে ঢুকে পড়েছে বর্ষা। লাগাতার বৃষ্টি জমাজল ইত্যাদি সব কিছুতে ইতিমধ্যেই নাজেহাল রাজ্যবাসী। তারই মধ্যে চিন্তা বাড়াচ্ছে লেপটোসপাইরোসিস (leptospirosis) এর সংক্রমন। করোনা আবহে মুম্বাই নগরী তে ইতিমধ্যেই বর্ষার এই ইনফেকশন নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে। বাকি অন্যান্য রাজ্যেও এই আগাম সংক্রমনের আশঙ্কা ভাবাচ্ছে। এই অবস্থায় আগেভাগেই সতর্ক থাকা দরকার লেপটোসপাইরোসিস – এর ইনফেকশন নিয়ে।
কি এই লেপটোসপাইরোসিস সংক্রমন?
এটি এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রমণ। রাস্তার জমা জলে কুকুর , বেড়ালের মূত্র থেকে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমন হয়। কুকুর, গবাদি, ঘোড়া, বেড়াল ও অন্যান্য গৃহপালিত পশুর মূত্রে এই রোগের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়।
রাস্তার জমা জলে আক্রান্ত প্রাণীর মুত্র মিশলে তার সংস্পর্শে এলে মানুষের এই ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রমন হওয়ার আশঙ্কা বেশী। চোখ বা নাক অথবা ত্বকের ক্ষতের মিউকোসাল স্তরের মধ্যে দিয়ে এই ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করে। মানুষের পক্ষে এই রোগের বাহক হওয়া বিরল ঘটনা, সুতরাং মানুষ থেকে মানুষে এই সংক্রমন ছড়ায় না।
উপসর্গগুলি কি কি?
কোনো মানুষ লেপটোসপাইরোসিসে আক্রান্ত হলে তার মধ্যে জ্বর , মাথা যন্ত্রণা , বমি , চোখ লাল হয়ে যাওয়া , গাঁটে গাঁটে ব্যাথা ,প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া , পেট খারাপ ইত্যাদি উপসর্গগুলো দেখতে পাওয়া যায়।
পেনিসিলিন, ডক্সিসাইক্লিন, সট্রেপ্টোমাইসিন ও এরিথ্রোমাইসিন-এর মত কিছু এন্টিবায়োটিক এই রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে বলে চিকিৎসকরা জানান। এমনকি শ্বাসের সমস্যার ক্ষেত্রে অক্সিজেন দেওয়া এবং লিভার ও কিডনি ফেলিওর -এর ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিকের সাথে পেরিটোনিয়াল ডায়ালিসিস ব্যবহার করা হয়ে থাকে এর চিকিৎসায়। তবে উপসর্গ দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিজে ওষুধ খাওয়ার ভুল করবেন না।
কিভাবে নিজেকে সুরিক্ষিত রাখবেন?
এই বর্ষায় জমা জল এড়িয়ে চলুন , নিজের বাড়িতে কোনো পশু পালিত হলে তাকে পরিষ্কার করার সময় সুরক্ষাকারী পোশাক পরতে হবে। পাশাপাশি নিজেকেও বর্ষায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। বাইরে থেকে এলে ডিসিইনফেক্টেড দিয়ে হাত পা ইত্যাদি পরিষ্কার করুন। উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত ডক্টর দেখিয়ে চিকিৎসা করুন।