স্কুল-কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর শিক্ষকদের কড়া নজর রাখা স্বাভাবিক। আমরা সকলেই জানি স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের কিছু নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়। তা পালনে ব্যর্থ হলে অনেক সময় শিক্ষক তা ছাত্রছাত্রীকে শাস্তি দিতে পারে। কিন্তু স্কুল বা কলেজে গিয়ে শিক্ষকের কথায় যদি সহপাঠী আরেক স্টুডেন্ট কে চড় মারে? শুনে অবাক লাগাটা স্বাভাবিক কেননা এই অবধি পড়ে অনেকেই ভাবছেন এমনটা হতে পারে নাকি। কিন্তু ঠিক এমনই ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক কলেজে। সেই ঘটনা ঘিরে তৈরী হয়েছে চাঞ্চল্য।
ঘটনাটি ঠিক কি? মিডিয়া রিপোর্টস্ অনুসারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্থিত ডক্টর রওশন আলম কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে কলেজে ক্লাস চলার সময় পড়া জিজ্ঞেস করেছিলেন ওই কলেজের সাদেকুর রহমান নামের এক শিক্ষক। ছাত্রী শিক্ষকের করা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি। এতেই রেগে যান ওই শিক্ষক। শাস্তি দিতে ক্লাসের এক ছাত্রকে তিনি নির্দেশ দেন সহপাঠী ছাত্রীর গালে সপাটে চড় মারতে।
এই অস্বাভাবিক শাস্তির কথা প্রকাশ্যে আসার পরই সারা কলেজে তোলপাড় পড়ে যায়। কিভাবে একজন শিক্ষক একটি ক্লাসের ছাত্রকে আরেক ছাত্রীর গালে চড় মারতে বলে সেই প্রশ্ন সকলের মনে। এই ঘটনায় তদন্ত করে দেখতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সেই কমিটির সদস্যদের কাছে কলেজ কর্তৃক চিঠি পাঠান হয়েছে।
ক্লাসের বাকী ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে জানা গেছে গত ৪ এপ্রিল দ্বিতীয় বর্ষের স্টুডেন্টদের সকলের পদার্থবিজ্ঞানের ক্লাস নিচ্ছিলেন শিক্ষক সাদিকুর রহমান। ক্লাসে পড়ানোর সময় একটি ছাত্রীকে তিনি একটি পদার্থ বিজ্ঞান সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেন। ছাত্রী উত্তর না দিতে পারলে ভীষণ রেগে যান ওই শিক্ষক। প্রথমে ছাত্রীটিতে নিজের গালে নিজেকেই চড় মারতে বলেন তিনি, কিন্তু ওই ছাত্রী সেটি করতে চায়নি। এরপর শ্রেণী কক্ষে উপস্থিত আরেক ছাত্রকে ওই ছাত্রীর গালে চড় মারতে বলেন সাদিকুর, শিক্ষকের নির্দেশ মতন ছাত্রীর গালে চড় মারে ওই ছাত্র। ক্লাস শেষ হলেই এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। কলেজে উত্তেজনা দেখা দেয়। জানাজানি হওয়ার পরই কলেজে উত্তেজনা দেখা দেয়। অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের অসন্তোষ সামাল দিতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে তড়িঘড়ি তদন্ত কমিটি তৈরি করতে হয়। আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে ওই কমিটিকে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।