মন্দির গড়ে এক মহিলা প্রয়াত স্বামীর মূর্তিকে পুজো করেন। অন্ধ্রপ্রদেশের প্রকাশম জেলায় এমনই এক অভিনব ঘটনার খবর সামনে এসেছে। মার্বেল দিয়ে তৈরি এই প্রয়াত স্বামীর মন্দিরটি এবং এই মন্দিরে তার স্বামী আঙ্কিরেড্ডি একটি আবক্ষ মূর্তি রয়েছে।
নিম্মভরম গ্রামের বাসিন্দা একটি পুরনো তেলেগু প্রবাদের জীবন্ত উদাহরন পদ্মাবতী যে ‘স্বামী তার স্ত্রীর জন্য জীবন্ত ঈশ্বরের সমান’।
ওই মহিলার পদ্মাবতী নাম। তিনি ছোট থেকেই দেখে এসেছেন যে, তাঁর মা পুজো করেন বাবাকে, রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে হিসেবে। পদ্মাবতী একই পথ বেছে নিয়েছেন নিজের জীবনেও। পদ্মাবতীর বিয়ে হয়েছিল আঙ্কিরেড্ডি নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় কিন্তু চার বছর আগে মৃত্যু হয়েছিল আঙ্কিরেড্ডির। পদ্মাবতী এই ঘটনায় ভেঙে পড়েছিলেন । স্বামীর মৃত্যুর শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি অনেকটা সময় কেটে যাওয়ার পরও। তারপর থেকে স্বামীর মূর্তিকে পুজো করেন তিনি, মন্দির গড়ে।
এর কারণ জানতে চাওয়া হলে পদ্মাবতী জানিয়েছেন, তাঁর স্বপ্নে দেখা দিয়েছিলেন আঙ্কিরেড্ডি মৃত্যুর কিছুদিন পরেই। তাঁর মন্দির গড়ার স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন পদ্মাবতী স্বামীর কাছ থেকেই। কীভাবে স্বামীর জন্য মন্দির গড়েছেন তা জানিয়ে পদ্মাবতী বলেছেন, তিনি একটি মার্বেলের মূর্তি গড়েন তাঁর প্রয়াত স্বামীর এবং তারপর থেকেই পুজো করে আসছেন। পদ্মাবতী জানিয়েছেন, যখন স্বামী বেঁচেছিলেন, তখনও তাঁকে দেবতা হিসেবে গন্য করতেন তিনি।
পদ্মাবতী জানিয়েছেন, পুজো ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয় আঙ্কিরেড্ডির জন্মদিন সহ বিশেষ দিনগুলিতে। প্রতি পূর্ণিমায় দরিদ্রদের খাবার দান করেন তিনি স্বামীর জন্য তৈরি করা মন্দিরে। পদ্মাবতীর ছেলে শিবশঙ্কর রেড্ডি আঙ্কিরেড্ডির বন্ধু এই সব কাজ করেন তিরুপতি রেড্ডির সাহায্যে। শিবশঙ্কর রেড্ডি বলেছেন, তিনি নিজেকে আশীর্বাদ ধন্য বলে মনে করেন, এমন বাবা-মার সন্তান হতে পেরে।
তেলেঙ্গানার ভিকারাবাদ জেলার বশিরাবাদ মণ্ডলের নাভালগা গ্রামে এর আগেও একই রকম ঘটনা ঘটেছিল, যখন কোন মোগুলাপ্পা, যার কোন সন্তান ছিল না, ঈশ্বরকে দত্তক নিয়েছিল এবং ছেলেটিকে নিজের ছেলের মতো দেখাশোনা করেছিল, তার ছোট ভাইয়ের নাতি।
ঈশ্বর তাঁর দাদুর এক মূর্তি তৈরি করেছিলেন এবং তাঁর নামে একটি ছোট মন্দির তৈরি করেছিলেন, ২০১৩ সালে মোগুলাপ্পার মৃত্যুর পর। তিনি মন্দিরে ২৪ লক্ষ টাকা খরচ করেছিলেন এবং সামাজিক সেবা শুরু করেছিলেন তাঁর নামে।