দেশ ছেড়ে পালাতে মরিয়া আফগান মহিলারা। মার্কিন বিমানে উঠতে পারলেই আপাতত এই নরক থেকে মুক্তি। দেশ ছাড়তে বেপরোয়া আফগান মহিলারা বিমানে ওঠার পাস পেতে অচেনা মার্কিনিদের গলায় পরাচ্ছেন মালা। আমেরিকার সংবাদমাধ্যমের একটি রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
তালিবানি শাসনের আতঙ্ক। মহিলাদের উপর অত্যাচারের ভয়াবহতা একের পর এক ঘটনায় সামনে আসছে। এবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন, তাদের এক প্রতিবেদনে, দেশত্যাগের জন্য আফগানদের মরিয়া প্রচেষ্টার আরও এক উদ্বেগজনক দিক তুলে ধরল।
তালিবানের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে যখন মার্কিন সেনা সহ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে একের পর এক বিমান পাঠাচ্ছিল আমেরিকা, সেগুলিই আসলে আফগান পরিবারগুলোর কাছে বাঁচার একমাত্র রাস্তা। যেন তেন প্রকারণে ঘরের মেয়েটাকে ওই বিমানে তুলে দিতে পারলে অন্তত প্রাণে তো বাঁচবে, এই ধারণা থেকেই শেষ কয়েকদিনে বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় জমিয়েছেন শত শত পরিবার। যে সকল আফগান নাগরিক মার্কিন মিত্র বলে পরিচিত, তাদেরকেই আমেরিকা তাদের দেশে স্থানান্তরিত হওয়ার অধিকার দিয়েছে। তাই গত কয়েকদিনে এই ধরণের পুরুষের দারুণ চাহিদা বেড়েছে। কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ভিড় করে মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন আফগান বাবারা। বহু আফগান নারীকেই তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য আমেরিকায় শরণার্থি হওয়ার যোগ্য বহু পুরুষকে মেয়েদের বাবারা অর্থও দিয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে পুরুষটি বিয়ে করতে রাজি না হলে, তার মেয়েকে মিথ্যা বউ সাজিয়ে বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্যও অর্থ দিয়েছে আফগান পরিবারগুলি। অনেক ক্ষেত্রে মহিলারা নিজেরাই এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। লক্ষ্য একটাই, তালিবানিস্তান থেকে মেয়েকে অনেক দূরে কোথাও পাঠিয়ে দেওয়া।
তবে, এই প্রবণতায় এক অন্য বিপদের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে বলে মনে করচেন মার্কিন কর্মকর্তারা। মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক আশঙ্কা করছে এইভাবে চলতে থাকলে খুব শীঘ্রই আফগান মহিলারা মানব পাচারের শিকার হবেন। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এবং প্রতিরক্ষা বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় মার্কিন বিদেশ দফতর এই এই ধরনের আফগান মহিলাদের দ্রুত চিহ্নিত করার কথা ভাবছে।