বাবাই তো জীবনের পথে এগিয়ে দিয়েছে হাত ধরে। সবটুকু স্যাক্রিফাইস করে সে সন্তানকে গড়ে তুলেছে। বড় হয়ে এই বার বাবার হাত মেয়ের ধরার পালা। তাই টলিউডের এই অভিনেত্রী উপার্জনহীন বাবার জন্য খুলে দিলেন একটি চায়ের দোকান। বাংলা সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজারের একটি প্রতিবেদনে এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
শেষ হওয়া এক পুজোর একটি গানের ভিডিয়োয় অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী বিনীতা, বর্তমানে যা দেখে ফেলেছেন প্রায় সাড়ে ছ’লক্ষের কাছাকাছি। এর সাথে সাথে কাজ করেছেন নানা বিজ্ঞাপন, ওয়েব সিরিজ়েও। তবে অভিনয় জগতে প্রবেশ করার আগেও তার জার্নিটা বেশ কঠিন ছিল। কলেজে পড়াশুনা করার সময় থেকে কাজ করে নিজের পড়াশোনার খরচটুকু জোগাড় করতেন বিনীতা। এখন তিনি অভিনয় করেন। কিন্তু তিনি ভুলে যাননি জীবন যুদ্ধে তার সংগ্রামের কথা।
গত বছর করোনা মহামারী সময়ে লকডাউনের কারণে নিজের ফার্মের কাজটা হারিয়েছিলেন যাদবপুর নিবাসী বিনীতার বাবা সুখেন গুহ। কিন্তু তাঁকে হেরে যেতে দেননি মেয়ে বিনীতা।বরং নিজস্ব ব্যবসা শুরুর ভরসা দিয়েছিলেন। এমনকি, সংসারের বাকি দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে উপার্জনক্ষম মেয়ে বাবাকে খুলে দিলেন তার নিজের চায়ের দোকান, যাতে তিনি ফের আত্মবিশ্বাসী হয়ে উপার্জন করতে পারেন ৬৫ বছর বয়সেও।
নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হওয়ার কারণে জীবন যুদ্ধের লড়াইয়ে টিকে থাকার মানসিকতাটুকু হারাননি। বিনীতা জানান, ‘‘আমরা ভাড়া বাড়িতে বসবাস করি। তবে মা-বাবার মাথার উপর ছাদ দিতে এক দিন বাড়ি করতে হবে আমায়, সেটা জানি। মনে মনে স্থিরও করে রেখেছি।’’
গত এক বছর বেশ কঠিন সময় ছিল। লকডাউনে অভিনয়ের কাজকর্ম বন্ধ থাকায় যথেষ্ট চিন্তায় ছিলেন বিনীতা। পরে ফের কাজ শুরু হলে সেখান থেকেই অল্প অল্প করে টাকা জমিয়েছেন বাবার চায়ের দোকানের জন্য। নিজে অভিনেত্রী হলেও বাবার চায়ের দোকানের স্বপ্ন পূরণ করতে দ্বিধা বোধ করেননি। রুপোলি পর্দার অভিনেত্রী থেকে চা-বিক্রেতা বাবার মেয়ে হয়ে ওঠার মধ্যে যে যাত্রাপথ— তাতে এতটুকু সামাজিক কুণ্ঠা বা গ্লানিবোধের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়নি তাঁকে।