জীবনের বেশিরভাগটাই তার কেটেছে যুদ্ধ ক্ষেত্রে। বীরাঙ্গনা সেই নারী যুদ্ধের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করতে করতে একসময় মানসিক ট্রমা হয় তার। কিছুটা অবসাদেও ভোগেন। এরপর তাকে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়। একসময়ের যুদ্ধ ক্ষেত্রে দাপিয়ে বেড়ানো ওই মহিলা বর্তমানে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করছেন।
৩৫ বছর বয়সী এই নারীর নাম গ্রেস পার্কার। তিনি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করেছেন। তিনি ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধ ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু ২০১৯ সালে, পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD) এবং বিষণ্নতায় ভোগার পরে তাকে মেডিকেলভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এই সময় তিনি খারাপভাবে ভেঙে পড়েছিলেন এবং গৃহহীনও হয়ে পড়েন।
দ্য সান-এর সঙ্গে কথোপকথনে গ্রেস বলেছেন- আমি কাউকে দোষ দিই না। এটা আমার নিজের পছন্দ। কিন্তু আমাকে যখন ডিসচার্জ করা হয়, সে সময় সেনাবাহিনীর প্রতি আমার ক্ষোভ ছিল। আমার মনে হচ্ছিল আমি শুধু একটা সংখ্যা মাত্র সেনা বাহিনীতে। রয়্যাল ইঞ্জিনিয়ার্স বিভাগে খুব বেশি মহিলা ছিলেন না। কিন্তু আমি সেনাবাহিনীর সাথে জীবনের অনেক বছর কাটিয়েছি এবং বহু সন্মান অর্জন করেছি, কিন্তু বুঝতে পেরেছি যে আমি কিছুই না। গ্রেস, যিনি যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড থেকে এসেছেন, ১৪ বছর সেনাবাহিনীতে কাটিয়েছেন। এ সময় তিনি সেরা রিক্রুট অ্যাওয়ার্ডও পান। তিনি ইরাকে পরিচালিত অপারেশন শেডারেরও অংশ ছিলেন। বাহিনীর রয়্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে তার চমৎকার কাজের জন্য তাকে প্রশংসাও দেওয়া হয়েছিল।
২০০৯ সালে, তার পোস্টিং আফগানিস্তানে হয়েছিল। এই সময় তিনি একটি শিবিরে ছিলেন যেখানে জিহাদি গোষ্ঠী আক্রমণ করার সর্বাধিক বেশি ঝুঁকি ছিল। তিনি সেখানে ৬ মাস বসবাস করেন। গ্রেস বলেছেন- আমাকে ২০১৯ সালে যথাযথ সম্মানের সাথে বাহিনী থেকে মেডিকেল ডিসচার্জ দেওয়া হয়েছিল।
এর পর তার বিয়েও ভেঙে যায়। এবং সে একা হয়ে যায়। পরে সে একটি হোটেলে চাকরি পায় এবং সে নার্সিং পড়া শুরু করে। কিন্তু কোভিডের সময়, সে সবে দাড়ি পড়লে তিনি তার মায়ের সাথে থাকতে যান।
গ্রেস বলল – আমি খুব বিরক্ত বোধ করছিলাম এবং কি করব বুঝতে পারছিলাম না। আমার টাকার প্রয়োজন ছিল। বাধ্য হয়ে যৌনকর্মী হয়েছি। প্রথমে একটি ডেটিং সাইটে একজন লোক কথা বলার সময় জিজ্ঞেস করেছিল আমি দেহব্যবসায় ইচ্ছুক কিনা। সে বলেছিল এই কাজে টাকা আছে। আমি কিছুটা ভাবনা-চিন্তার পরে হ্যাঁ করে দেই। সেই থেকে আমি একজন যৌন কর্মী।