রাজস্থানের ভিলওয়ারায় এক কনে তার কুমারীত্ব পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার পরে, তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। শুধু তাই নয়, এই ইস্যুতে গ্রামে পঞ্চায়েতও বসেছিল এবং পঞ্চায়েত রীতিমত তালিবানদের মত শাস্তি ঘোষণা করতে গিয়ে কনের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানাও করে। জরিমানার টাকা না দেওয়ায় এখন কনের পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে।
এই চাঞ্চল্যকর এবং লজ্জাজনক ঘটনাটি রাজস্থানের ভিলওয়ারা জেলার বাগর থানা এলাকার। এই বিষয়ে, স্টেশন ইনচার্জ আইয়ুব খান জানান যে ভিলওয়ারা শহরে বসবাসকারী ২৪ বছর বয়সী এক তরুণীর বিয়ে হয়েছিল ২০২২ সালের ১১ই মে বাগোরে। এই সমাজে প্রচলিত আছে কুকড়ি প্রথা অর্থাৎ কনের কুমারীত্ব পরীক্ষার রীতি। এই পরীক্ষায় ব্যর্থ হয় কনে। এরপর কনে তার শ্বশুরবাড়িতে জানায়, বিয়ের আগে তাকে প্রতিবেশী এক ছেলে ধর্ষণ করেছে, যার বিরুদ্ধে থানায় মামলাও হয়েছে। তবে কনের এই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হননি শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
বাগোর থানা এলাকার ভাদু মাতা মন্দিরে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির তরফে একটি খাপ পঞ্চায়েত ডাকা হয়েছিল। তখন পঞ্চায়েত কোনো সিদ্ধান্ত না দিলেও ৩১ মে আবার পঞ্চায়েত বসে এবং আচারের নামে মেয়ের পক্ষকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। খাপ পঞ্চায়েতের এই তুঘলকি ডিক্রির বিরুদ্ধে মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন এবং ডিএসপি তদন্ত করে। এর পর এই ঘটনায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
জরিমানার টাকা নিয়ে গত ৫ মাস ধরে হয়রানির শিকার হয়েছিলেন ভিকটিম। জানিয়ে রাখি, এই কুপ্রথার কারণে ওই এলাকায় হয়রানির শিকার হয়ে এর আগে এক তরুণী আত্মহত্যা করেছিলেন।
কুকড়ি ঐতিহ্য কি
কনের কুমারীত্ব পরীক্ষা করা হয় কুকড়ি পরীক্ষার অধীনে। এর জন্য, ফুলসজ্জার দিন বর-কনের বিছানায় একটি সাদা চাদর বিছিয়ে দেওয়া হয় এবং যদি চাদরে রক্তের চিহ্ন পাওয়া যায় তবে কনে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বলে মনে করা হয়। যদি তা না হয়, তবে এটি ব্যর্থ হিসাবে ঘোষণা করা হয়। এরপর কনেকে নির্যাতন করা হয় এবং তার অতীত সম্পর্কের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।