সম্পত্তির লোভ যে কতো ভয়ঙ্কর হতে পারে তার জলজ্যান্ত প্রমাণ পাওয়া গেলো কেরালার এক ঘটনায়। আশি ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধ সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের কারণে আগুনে পুড়িয়ে হত্যালীলা চালালো। এবং তার ক্রোধের শিকার হলেন তার নিজেরই ছেলে, ছেলের বউ এবং দুই নাতনি। শেষ রাতে নিঃশব্ধে চললো এই হত্যালীলা।
কেরালায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক উন্মত্ত বৃদ্ধ তার ছেলে সহ পরিবারকে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনাটি চেনিকুঝি তালুকের থুদুপুঝা এলাকার। অভিযুক্ত বৃদ্ধের নাম হামিদ। হামিদকে (৭৯ বছর) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মর্মান্তিক এই ঘটনার তদন্ত চলছে। পুলিশ বলছে, পারিবারিক কলহের জেরেই গোটা ঘটনা ঘটেছে। আগুনে পুড়ে মারা গেছেন যারা তারা হলেন ফয়জল, শিবা (ফয়জলের স্ত্রী), এবং তাদের দুই সন্তান মেহরা (১৬) এবং আশনা (১৩) (ফয়জল-শিবার সন্তান)। পুলিশ জানায়, গভীর রাতে ফয়জল, শিবা ও তাদের পরিবার গভীর ঘুমে তলিয়ে থাকার সময় হামিদ তাদের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বৃদ্ধের মৃত সন্তান ফয়জল ওই এলাকায় একটি মুদির দোকান চালাতেন। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে সংসার করছিলেন তিনি। তার বাবা বেঁচে থাকলেও তার সাথে থাকতেন না তিনি। পুলিশ জানায়, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বেশ কয়েক বছর ধরে দুজনেই আলাদা থাকছিলেন।
হামিদ তার ছেলেকে থুডুপুঝায় কিছুটা জমি দিয়েছিলেন। এরপর হামিদ মানিয়ানকুড়িতে বসতি স্থাপন করেন। কিন্তু ২০১৮ সালে, হামিদ থোদুপুঝায় ফিরে আসেন এবং তার ছেলেকে দেওয়া জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। কিন্তু জমি ফেরত দেননি ফয়জল। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে হামেদ ছেলে ও তার পরিবারকে হত্যা করে।
পুলিশ বলছে, বৃদ্ধ হামিদ আগেই সুপরিকল্পিত ভাবে এই হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। গোপনে বাড়িতে পেট্রোল রেখেছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি বাড়ির ট্যাঙ্কের জলও খালি করে দিয়েছিলেন, যাতে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে জল না মেলে। এমনকি ঘরের বাইরে ঝুলিয়ে দেন একাধিক তালা। সরিয়ে ফেলেন কুয়োর দড়ি বালতিও যাতে প্রতিবেশীরা সাহায্য করতে এলেও কোনো লাভ না হয়। কার্যত ঘুমের মধ্যে অসহায় ভাবেই আগুনে পুড়ে মারা যান তারা। নারকীয় হত্যালীলা চালানোর পর আসামি বৃদ্ধ হামিদ নিজের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করে। সেখান থেকে পুলিশ অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। বিষয়টি তদন্তাধীন।