সিনেমার নাম থেকে গ্রামবাংলার বহুকথিত প্রবাদ – জানলা দিয়ে বউ পালাল। এবার তা দেখা গেল বাস্তবেও। ডায়মন্ড হারবারে (Diamond Harbour) বিয়ের রাতে পুলিশের তাড়া খেয়ে এভাবে জানলা দিয়েই পালিয়ে গেল নাবালিকা নববধূ। সঙ্গে বরও। যদিও পালিয়েও শেষরক্ষা হল না। পুলিশের হাতে ধরা পড়ল বছর চোদ্দর নাবালিকা এবং ২০ বছরের বর। যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নাবালিকাকে পাঠানো হয়েছে সিনি চাইল্ড হোমে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) কুলপির নিশ্চিন্তপুরের বাসিন্দা বছর কুড়ির ওই যুবক। পাশে নোদাখালির ১৪ বছরের মেয়েটির সঙ্গে তার এক বছরের প্রেমের সম্পর্ক। মেয়েটি বোহালি হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। এর আগেও একবার ছেলেটির সঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে নিজের বাড়ি ছেড়েছিল কিশোরী। তবে সেবার তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় মা-বাবা। কিন্তু শনিবার আর তা মেয়েকে ফেরানো যায়নি। জানা যায়, ছেলেটির দিদির বাড়ি ডায়মন্ড হারবার থানা এলাকার লালবাটি গ্রামে। দিদির সাহায্যেই এবার নাবালিকা প্রেমিকাকে স্ত্রী করে ঘরে আনতে চেয়েছিল কুড়ির যুবক।
সেইমতো শনিবার রাতে ধুতি-পাঞ্জাবিতে বরবেশে বেনারসি পরিহিতা কিশোরীকে সে বিয়ে করে লালবাটি গ্রামের চণ্ডী মণ্ডপে। মন্ত্রোচ্চারণ, সিঁদুরদান – সব পর্ব সারা হয়েছিল। এমনই সময়ে নাবালিকা বিবাহের (Child Marriage) খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয় ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ। ব্যস, পুলিশকে দেখেই জানলা দিয়ে ঝাঁপ দিয়ে পালায় নববধূ। সঙ্গে বরও। বেশ কিছু দূর চলে যায় তারা। পালটা তাদের ধাওয়া করে পুলিশও। শেষমেশ অবশ্য পুলিশের হাতে ধরা পড়ে নবদম্পতি।
সদ্য বিয়ে করা ১৪ বছরের মেয়েটিকে সিনি চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে পুলিশের হাতে। তাকে লক্ষ্মীকান্তপুরের হোমে পাঠানো হয়। সংস্থার তরফে কো-অর্ডিনেটর দেবারতি সরকার বলেন, ”মেয়েটির কাউন্সেলিং চলছে। ওকে আমরা বোঝাচ্ছি অল্প বয়সে বিয়ে করার ক্ষতিকার দিক। আশা করি, ও সব বুঝতে পারবে।” ফলে মধুরেণ সমাপয়েত তো দূরের কথা, পালিয়ে বিয়ে করে একসঙ্গে থাকার বদলে আপাতত প্রেমিক-প্রেমিকার বিচ্ছেদপর্ব চলছে।