ভাইরাল ভিডিও বানানোর নেশা। সোশ্যাল মিডিয়াতে পরিচয় পাওয়ার স্বপ্নে বিভোর মানুষের খেয়াল থাকে না কত ঝুঁকি নিচ্ছে সে। প্রাণ হাতে করে ভিডিও বানাতে গিয়ে কত মানুষ অ্যাক্সিডেন্টে পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে। তবু যেন এই নেশা কিছুতেই কাটে না। সেই নেশারই বলি এবার এক কিশোর। যার মৃত্যু হল রেললাইনের ধারে মোবাইল থেকে ভিডিও বানাতে গিয়ে । গত শুক্রবার দিন এই ঘটনা ঘটেছে ভদ্রেশ্বর এলাকায়।
দুই বন্ধু ট্রেন লাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ভিডিয়ো করছিল। লাইনের থেকে তারা ছিল কিছুটা দূরত্বে। আর তৃতীয় জন লাইনের একেবারে পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। ভিডিয়োয় মগ্ন তিনজনের কেউ খেয়াল করেনি, ট্রেন তীব্র গতিতে ছুটে আসছে। মুহূর্তের ভুলে লাইনের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা কিশোরটিকে সেই ট্রেনই ধাক্কা মারল। দেহ ছিটকে পড়ল। তাকে দেখা গেল রক্তাক্ত অবস্থায় সেই ভিডিয়োতেই। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি হুগলির ভদ্রেশ্বরে ঘটেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধীরজ পটেল (১৬) মৃত কিশোরের নাম। ভদ্রেশ্বর রেল বস্তির বাসিন্দা সে। ধীরজ ও তার দুই বন্ধু মিলে দশমীর দিন বিকেলে একটি ভিডিয়ো করতে যায় রেল লাইনের ধারে। কিন্তু আপ তিন নম্বর লাইনে সেই ভিডিয়ো রেকর্ডিং করার সময়েই ব্যান্ডেলগামী একটি লোকাল ট্রেন তীব্র গতিতে ছুটে আসছিল। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, চালক একাধিকবার হর্ন বাজিয়েছিলেন। কিন্তু ধীরজদের তাতেও হুঁশ ফেরেনি। ট্রেন পিছন থেকে এসে ধাক্কা মারে।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর বলেন, “মাঝেমধ্যেই ছেলেগুলো এখানে আসত। গল্প করত, ছবিও তুলত। আমরা অনেকেই বারণ করেছিলাম। ট্রেনের লাইনের পাশে এই ভাবে বসে আড্ডা মারাটা ঝুঁকির। কখন দুর্ঘটনা ঘটে যাবে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, কিশোরের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। শেওড়াফুলি জিআরপি শ্রীরামপুর হাসপাতালে নিয়ে যায় মৃতদেহ উদ্ধার করে। সেখান থেকে ময়নাতদন্তে দেহ পাঠানো হয়। পরিবারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, নেটমাধ্যমের জন্য ভিডিয়ো তৈরি করার অভ্যাস ছিল ধীরজের বিভিন্ন সময় ঝুঁকি নিয়ে। একটি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ তার বন্ধুদের থেকে।