Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

কিভাবে ৫ হাজার কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করে এই আইএফএস অফিসার ৩ টি গ্রামে কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করলেন

চলতি বছরের জুন এবং জুলাই মাসে, মধ্যপ্রদেশের মাইহার বন মহকুমা ৪.৭ লক্ষ গাছের চারা রোপণের বার্ষিক অভিযান পরিচালনা করেছিল। অভিযান শেষ হওয়ার পরপরই ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিসের (আইএফএস) কর্মকর্তা অনুপম শর্মা এই কাজ ঠিক মত হয়েছে কিনা সেটা দেখার জন্য এলাকা পরিদর্শনে যান। কিন্তু সেই এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তার চোখে এমন কিছু পরে যা দেখে তিনি হতবাক হয়ে যান। দেখেন সবুজ অভিযানের উদ্দেশ্যে বৃক্ষ রোপণ অভিযান সম্পন্ন করা অঞ্চলে পলিথিনের প্যাকেটে ছয়লাপ।

কিন্তু কোথা থেকে এল এই প্লাস্টিক? জানা যায় বন বিভাগ যে পাঁচ লাখ চারা রোপণ করেছিল তাদের প্রত্যেকটি একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে মোড়ানো ছিল। এই দৃশ্য দেখে আশ্চর্য হয়ে যান আইএফএস অফিসার অনুপম শর্মা। তিনি বলেন একদিকে আমরা পরিবেশের কারণের দিকে কাজ করছিলাম, অন্যদিকে আমাদের কারণে প্রায় ৫০০০ কিলো প্লাস্টিক বর্জ্য জমা হয়েছিল যা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো বৈধ উপায় নেই, তিনি এক সংবাদ পত্রকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন।

অনুপম, ট্রেনি সাবডিভিশন অফিসার হিসাবে নিযুক্ত, বলেছেন যে অনিয়ন্ত্রিত প্লাস্টিকের বর্জ্য দূষণ ছড়ায় বছরের পর বছর পরিবেশের ক্ষতি করে।

তিনি স্থানীয় নাগরিক সংস্থার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তারা এই বিষয়ে কোনো ধরনের সাহায্য করতে পারে না। তিনি আগুনে এত কেজি প্লাস্টিক পোড়াতে পারেননি কেনোনা এতে পরিবেশ দূষিত হবে। তখন অনুপম শর্মা প্লাস্টিকের বর্জ্য প্রশমনের বিষয়ে আরও একটু গবেষণা করে। এরপরই সে খোঁজ করে স্ক্র্যাপ ডিলারের। অবশেষে সে এমন একজন স্ক্র্যাপ ডিলারের খোঁজ পায়, যিনি ওজন হিসাবে এই বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য কিনতে রাজি হন এবং নিশ্চিত করেন যে এটি ইন্দোর এবং জব্বলপুরের পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লান্টগুলির দ্বারা পুনঃব্যাবহার হবে। স্ক্র্যাপ ডিলার এর বিনিময়ে ৫৯০০০ টাকা প্রদান করে। সেই অর্থ ডিপার্টমেন্টে জমা হয়।

কিন্তু অনুপম ভেবে পাচ্ছিলেন না কিভাবে এই অর্থ সামাজিক কাজে ব্যবহার করা যায়। তাই তিনি সমাধানের জন্য তার স্ত্রী, ভাবনা, যে একজন কঠিন বর্জ্য ইত্যাদির উপর গবেষণা করে তেমন বিশেষজ্ঞ তার কাছে যান।

ভাবনা একটি বৃদ্ধাশ্রমে একটি বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন, একটি তেল প্রেসার মেশিন এবং একটি মসলা গ্রাইন্ডার ইউনিট স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল গ্রামবাসীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। অনুপম জানান আমরা এই সমস্ত ইউনিটগুলি ভর্তুকি হারে কিনেছি, এবং এটি আমাদের ক্রয় খরচ প্রায় ৫০ শতাংশে কমিয়ে আনতে সাহায্য করেছে। এই মেশিনগুলো প্রতিস্থাপনের ফলে যেমন আশে পাশের ৩ টি গ্রামের বহু লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে তেমনই প্লাস্টিকগুলো থেকে কোনো রকমের পরিবেশ দূষণও ছড়ায় নি। ফরেস্ট অফিসার অনুপমের এই কীর্তি নিঃসন্দেহে তারিফের যোগ্য।

Related posts

লিপস্টিক ঠোঁটে থাকে না! মেনে চলুন এই পদ্ধতি

News Desk

স্ত্রীর মৃত্যুর ২১ বছর পরেও তাকে যেতে দিতে নারাজ স্বামী! অবশেষে এই কারণে করলেন শেষকৃত্য

News Desk

ভারতের দৈনিক করোনা পরিস্থিতি ফের নিয়ন্ত্রণে, এরাজ্যের কোভিডগ্রাফে উদ্বেগ বৃদ্ধি

News Desk