পৃথিবীর হাতে আর বেশি সময় নেই। মনুষ্যজাতি যেভাবে তাদের বিবেচনা বিহীন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে প্রকৃতি ধ্বংস করে আসছে, বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছে সেই কারণে এখন নাকি চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে এই নীলাভ গ্রহটি। তারা বলছে খুব জোর চারশো বছর, তার মধ্যেই বাসযোগ্য আর থাকবে না এই পৃথিবী। মানবসভ্যতার কাছে পরিনত হবে একটি ভিনগ্রহে। যেভাবে দ্রুত হারে মানুষের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর জীবনযাত্রার কারণে পৃথিবীর জলবায়ুর অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে, তাতে মনে হয় না মানুষ আর খুব বেশি দিন পৃথিবীতে থাকতে পারবে। না পৃথিবী থাকবে মানুষের বাসযোগ্য! ভাববেন না এরম কোনো জ্যোতিষের ভবিষ্যৎবাণী পৃথিবীকে নিয়ে, এই মর্মে সতর্কবাণী দিয়েছেন খোদ রাষ্ট্রপুঞ্জের বিজ্ঞানীরা তাঁদের সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে। যার নাম- ইউনাইটেড নেশন্স অ্যাসেসমেন্ট অব ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন্স। উল্লেখিত গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক জলবায়ু বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘গ্লোবাল চেঞ্জ বায়োলজি’-তে। বাংলা সংবাদপত্র আনন্দবাজারে
সো রিপোর্টে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্র দ্রুত হারে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের পরিমাণ কমানোর যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেগুলি যদি সম্পূর্নভাবে মেনেও চলা হয় তাহলেও আরো ৭৯ বছরের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা শিল্পবিপ্লব আসার আগের দুনিয়ার থেকে অন্তত ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। যার ফলে জলবায়ুর ক্রমাগত পরিবর্তন হবে যেই কারণে বহু দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরিমাণ ভীষণ ভাবে বেড়ে যাবে। হিমবাহ গলে যাবে। সমুদ্রের জ্লস্তরও বেড়ে যাবে অনেকটাই। বহু যুগ ধরে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি আবারও জেগে উঠবে। দাবানলে জঙ্গল পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। সব মিলিয়ে, ঘূর্ণিঝড়, খরা, বন্যা, তাপপ্রবাহ ও শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতা ও সংখ্যা এতটাই অকল্পনীয় ভাবে বেড়ে যাবে যে ২৫০০ সালে পৃথিবী আর বাসযোগ্য থাকবে না। ফলে ক্রমেই মানবসভ্যতা বিপর্যস্ত হতে থাকবে পৃথিবী থেকে। মানুষের কাছে এই বসুন্ধরাই হয়ে উঠবে ভিন্গ্রহ। স্থল ও জলের যাবতীয় বাস্তুতন্ত্রেরও আমূল পরিবর্তন ঘটবে।
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি আগেই সতর্কবাণী দিয়েছিল, ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা-বৃদ্ধিকে শিল্পবিপ্লবের আগের সময়ের চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বেঁধে রাখতেই হবে। না হলে শেষের সে দিন ঘনিয়ে আসবে পার্থিব সভ্যতার। তাই আর বিন্দুমাত্র দেরি না করে সম্পূর্ন সচেতনতা নিয়ে ঠেকাতে হবে জলবায়ু পরিবর্তনের এই প্রবণতা। বিজ্ঞানীদের মত, মানুষের হাতে আর বেশি সময় নেই।