পুরুষ ছাড়াই সন্তানের জন্ম দিলেন এক মহিলা,
কি ভাবছেন এটাও সম্ভব? হ্যাঁ ঠিক দেখেছেন পুরুষ ছাড়াই এক মহিলা গর্ভবতী হলেন, ভাবছেন কিভাবে? আসুন জেনে নেই।
ভার্চুয়াল সম্পর্কের জেরেই এটা হলো, ওই মহিলা গর্ভবতী হলেন।
তাহলে এবার সম্পূর্ণ বলা যাক।
স্টেফনি টেইলার ব্রিটেনের বাসিন্দা এক সন্তানের জননী। তাঁর ইচ্ছে হয় দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিতে। কিন্তু কোনও সম্পর্কে জড়িত হতে নারাজ ছিলেন স্টেফনি তার জন্য। কোনও ফার্টিলিটি সেন্টারে গিয়েও এমনকি তাঁর ইচ্ছা ছিল না গর্ভবতী হওয়ার। তাঁর পোষাবে না ক্লিনিকের অত খরচ। তাহলে এখন কি উপায়? তিনি অনলাইনে শুক্রাণু বা স্পার্ম অর্ডার দেন। আজ্ঞে হ্যাঁ। ভুল নয় লেখার। পুরুষের শুক্রাণু কেনেন এই ব্রিটিশ নাগরিক অনলাইনেই।
দ্বিতীয়বার মা হওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছিলেন স্টেফনি টেইলার মোটামুটি ২০১৯ সাল থেকেই। এই নিয়ে গবেষণা শুরু করেন তিনি ইন্টারনেটে। একটি ‘ই-বেবি’ অনলাইন স্টোরের খোঁজ পান। সেখানেই জানতে পারেন উপযুক্ত এবং সুস্থ স্পার্ম ডোনারদের কথা। এবং সেই স্পার্ম অনলাইনে কিনতে পাওয়া যায় তাও জানতে পারেন। একটি কিট আসবে স্পার্মের অর্ডার দেওয়া হলে । সন্তান ধারণের সহায়ককারী যাবতীয় সরঞ্জাম তাতেই থাকবে। অনেকটাই সস্তা এই অনলাইন স্পার্ম ফার্টিলিটি ক্লিনিকের চেয়ে। অবশেষে ভাবনা চিন্তা করে নিজের জন্য একটি স্পার্ম কিট অর্ডার দিয়ে দেন স্টেফনি। স্পার্ম ডোনারের সঙ্গে স্টেফনি নিজে কথা বলেন ওই অ্যাপের মাধ্যমে। সেই স্পার্ম এবং ইনসেমিনেশন কিট ২০২০ সালের জানুযারি মাসে এসে পৌঁছোয় স্টেফনির বাড়ির দোরগোড়ায়।
ঘরে তো স্পার্ম এল এবার তা শরীরের ভিতরে প্রবেশ করবে কী করে? এবারেও স্টেফনি ঝুঁকি নেন। শরীরে স্পার্ম প্রবেশের নিয়ম। ইউটিউবে দেখে নেন এবং শরীরের ভিতর শুক্রাণু প্রবেশ করান নিজে নিজেই।
ভাগ্যবতী স্টেফনি। সফল হন তিনি প্রথমবারের চেষ্টাতেই। স্টেফনি জন্ম দেন এক সুস্থ সবল কন্যা সন্তানের । এডনা নাম রাখেন। দারুণ খুশি পাঁচ বছরের ফ্র্যাঙ্কি ছোটো বোনকে পেয়ে। সে বিশেষ মাথা ঘামায় না ‘বাবা’ বস্তুটি নিয়ে। তার কাছে সব মা-ই। যখন তাকে একটি ছোট্টো বোন উপহার দিয়েছেন সেই মা তখন সে আহ্লাদে আটখানা। অবশ্য স্টেফনির এক প্রাক্তন ফ্র্যাঙ্কের বাবা। ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছে উভয়ের মধ্যে। ফ্র্যাঙ্ক মায়ের কাছেই থাকে ছোট্টো থেকে।
বেশ খুশি হযেছেন স্পার্ম ডোনারও স্টেফনির এই সাহসী পদক্ষেপে। স্টেফনিকে সাহায্য করতে তৈরি তিনি ভবিষ্যতেও। আর স্টেফনির কথায় তাঁর সংসার এতদিনে পূর্ণ হল। সুখে দিন কাটাবেন এক ছেলে এবং এক মেয়েকে নিয়ে এই তাঁর আশা। তাঁর জীবনের একটি আশীর্বাদ স্বরূপ বাড়ির নতুন ছোট্টো অতিথি। স্টেফনি তাই আপ্লুত। আর এর জন্য তিনি আধুনিক প্রযুক্তিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
ইন্টারনেট নির্ভরশীল আজকের ‘স্টেফনি’রা। ইন্টারনেটের মাধ্যমে করে ফেলতে পারেন তাঁরা সংসার যাবতীয় কাজ, কর্মক্ষেত্রের কাজ সবই। আর কারও অধীনে থাকতে হবে না এবার যে মাতৃত্বের জন্যও এই ব্রিটিশ নাগরিক তা প্রমাণ করে দিলেন। তবে হ্যাঁ একবারেই সুস্থ সবল সন্তানের জন্ম দিয়েছেন স্পার্ম ও ইনসেমিনেশনে কিটের সাহায্যে ভাগ্যবতী স্টেফনি , কিন্তু তা বলে সকলের ক্ষেত্রে এমন হয় না। একটা ঝুঁকি থেকেই যায়। তবে সমস্ত সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে সচেতনতা এবং সঠিক জ্ঞান। এমনিতেই ব্রিটিশরা সচেতন নাগরিক বলে বিশ্বজুড়ে খ্যাত। তাই অনুকরণ তাঁদের সচেতনতাকে করা উচিত। না হলে স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে হানিকর হতে পারে অযথা ঝুঁকি।