ধর্ষণ করার চেষ্টা চালিয়েছেন এমন অভিযোগে আটক করা হয়েছিল এক তরুণকে। অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে শোনাল এক অভিনব সাজা। সেই সাজার কথা আলোচিত এখন সারা দেশে।
সর্বভারতীয় নানা গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই ঘটনার কথা। জানা গিয়েছে, এই ঘটনাটি বিহারের। বিহারের মধুবনী জেলার ঝঞ্জরপুরের অতিরিক্ত জেলা জজ অবিনাশ কুমার এই অভিনব রায় দিয়েছেন। ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্ত ওই তরুণকে জজ অবিনাশ কুমার শর্তে জামিন দিয়েছেন যে তাকে টানা ছ’মাস গ্রামের সমস্ত মহিলাদের কাপড় কেচে ধুয়ে দিতে হবে। আর শুধু ধুয়ে দিলেই হবে না, তাকে তাদের কাপড়গুলো ভালোভাবে ইস্ত্রিও করেও দিতে হবে। জজ এমন রায়ের বিষয়ে জানিয়েছেন এই কাজ করলে আগামীতে ওই যুবক মহিলাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে পারবে।
ধর্ষনের চেষ্টায় দোষী সাব্যস্ত এই যুবকের নাম লালনকুমার সফি। বয়স কুড়ির দোরগোড়ায়। নথিভুক্ত মামলার সূত্রে জানা জানা গেছে লালন কুমার সাফি (২০) নামের ওই যুবক ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছেন ঝাঁঝাপুর এলাকার একটি গ্রামের এক মহিলাকে। এই নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন ওই মহিলা। জানা গেছে, ওই তরুণ গত ১৭ এপ্রিল ওই মহিলার ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে ১৯ এপ্রিল ওই তরুণকে আটক করে হাজতে ঢোকায় পুলিশ। আর অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতে মামলা দায়ের হয়। মামলা চলাকালীন সফি-র আইনজীবী বলেন, যেহেতু তার মক্কেলের মাত্র ২০ বছর বয়স, সেই কারণেই তাকে শুধরানোর একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। পাশাপাশি, এই তরুণ নাকি ভালো কাজ করে নিজেকে সমাজের মূল স্রোতে ফেরাতে চায়। এমন আবেদন শুনে আদালত ১০ হাজার টাকার দু’টি ব্যক্তিগত বন্ডে লালন সুফি নামক যুবকের জামিন মঞ্জুর করে। কিন্তু সাথেসাথে একটি শাস্তিও দেয়, বলেন আগামী ছ’মাস তাকে বিনাপয়সায় গ্রামের সব মহিলাদের কাপড় ধুয়ে ইস্ত্রী করে দিতে হবে।
সূত্র অনুযায়ী জানা গেছে আদালতের এই রায়ের কপি গ্রাম পঞ্চায়েতে পাঠানো হয়েছে। যাতে পঞ্চায়েতের নির্বাচিত কোনো ব্যক্তি অভিযুক্ত যুবকের ওপর নজর রাখেন সে যেনও কোনও পেশাদার ধোপার সহযোগিতা না নিয়ে নিজেই করছে এই কাজ। ছ’মাস বাদে যদি গ্রামের প্রধান বা কোনও সরকারি অফিসার শংসাপত্র সহ বলেন, সে আদালতের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে, তা হলেই ছাড় মিলবে।
ওই গ্রামের মোট জনসংখ্যা প্রায় দুই হাজার। এমন গ্রামের সব মহিলার কাপড় ধুয়ে উঠাতে যে ওই তরুণের বেশ বেগ পেতে হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।