মুড়ি বাঙালিদের একটি খুব প্রিয় খাদ্য, অনেকেই মুড়ি দিয়ে চপ খুবই ভালো খান কেউ আবার ঘুগনি দিয়েও ভালো খান। আবার এই মুড়ি নিয়েই একটা আলাদা মেলাও আছে! মাঘ মাসের ৪তারিখে এই মেলা নিয়ে বিশাল উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে বাঁকুড়াতে। পুরো মুড়িতে ছড়াছড়ি হয়ে থাকে দ্বারোকেশ্বরের চর । এই মুড়ির মেলা বাঁকুড়া (Bankura)-র কেঞ্জাকুড়া (Kenjakura)। ১৫০ বছরেরও পুরানো এই মুড়ির মেলা ।
একটা গোটা মেলা শুধুমাত্র মুড়ি নিয়েই! নিজে চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাসই করবে না। রবিবার প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ টি গ্রামের মানুষ আসে এই বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়া গ্রাম সংলগ্ন দ্বারকেশ্বর নদের চরে । মুড়ি মেলা বসে প্রতি বছর মাঘ মাসের চার তারিখে কেঞ্জাকুড়া গ্রাম সংলগ্ন দারকেশ্বর নদের চরে। সেখানেই বিভিন্ন পদ দিয়ে মুড়ি খেতে ভিড় জমান কয়েক হাজার মানুষ পরিবারের সদস্য অথবা বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে। নদের চরে বালির উপরে পঞ্চব্যঞ্জন সহযোগে মাখা হয় মুড়ি গামছা পেতে। মেনুতে থাকে আলুর চপ, বেগুনি, শিঙাড়া, চানাচুর, পেঁয়াজ আর লঙ্কা। দিনভর একসঙ্গে শীতের নরম রোদে মুড়ি খাওয়ার পাশাপাশি চলে হই, হুল্লোড় আর আনন্দ।
অত্যন্ত প্রাচীন বাঁকুড়ার এই মুড়ি মেলা। কেঞ্জাকুড়া বাঁকুড়া-১ নম্বর ব্লকে। দ্বারকেশ্বর নদী শহর থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে। সঞ্জীবনী মাতার আশ্রম নদের ধারে রয়েছে । জনশ্রুতি আছে, এক সাধকের প্রতিষ্ঠিত নদীর ধারের আশ্রমে রাতভর হরিনাম সংকীর্তন শুনে বাড়ি ফেরার সময় ভক্তরা নদীর চরে বসে মুড়ি খেতেন। আর এই মুড়ি মেলার প্রচোলন তা থেকেই। রবিবার সকাল থেকে নদীর চরে চলে আসেন প্রত্যেকে নিজের বাড়ি থেকে মুড়ি, চপ, বেগুনি, ঘুগনির মতো খাদ্য সামগ্রী নিয়ে। এমনিতেই মুড়ি খাওয়ার প্রচলন বেশি বাঁকুড়ায়। সেই বহর যেন মুড়ি মেলায় আরও বেড়ে যায়।