সার্স-কোভ-২ যা কোভিড-১৯ অন্যতম ধারকওবাহক সেই ভাইরাস বায়ুবাহিত নয়। এত দিন পর্যন্ত সাধারণ মানুষের কাছে ধারণা ছিল এমনটাই। কিন্তু সম্প্রতি সেই দাবি কে নাকচ করে দিচ্ছে আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত এক রিপোর্ট। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, সার্স-কোভ-২ জীবাণু বায়ুবাহিত। এই যুক্তির সপক্ষে বেশ কিছু প্রমাণ নাকি ইতিমধ্যেই বিজ্ঞানীরা পেয়েছেন। মনে করা হচ্ছে এই অনুমান প্রমাণিত হলে, করোনা সুরক্ষাবিধিতেও অনেক বড় বদল আসতে পারে।
এই গবেষণার সাথে আমেরিকা, ব্রিটেন ও কানাডার ৬ গবেষক যুক্ত রয়েছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক তথা এই গবেষক দলের মুখ্য গবেষক ট্রিশা গ্রিনহল তাঁদের এহেন দাবির পিছনে অন্তত ১০টি কারণ দেখিয়েছেন। নানা ধরনের পরিবেশে করোনার সংক্রমণ- এর গবেষণা করে তাঁদের সিদ্ধান্ত, করোনার জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার জন্য শুধুমাত্র বাতাসই যথেষ্ট। শুধুমাত্র ড্রপলেটস-এর মাধ্যমেই করোনার ভাইরাস ছড়ানোর সপক্ষে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ পাননি তাঁরা।
তাদের গবেষণয় তারা এমন কিছু পরিবেশে করোনার সংক্রমণ ছড়ানোর পরীক্ষা করেছেন যেখানে ভাসমান জলকণার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার কোনও উপায়ই নেই। শুধুমাত্র বাতাস মাধ্যমগুলি দিয়েই ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারত। এমনকি অনেক হাসপাতালে অনেক স্বাস্থ্যকর্মীই কোভিড গাইডলাইন মেনে চলেও, পর্যাপ্ত সাস্থ্যবিধী মেনেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ভাইরাসটি শুধু ড্রপলেটসর মাধ্যমে সংক্রমিত হলে, এমনটি সম্ভব হত না বলে দাবি গবেষকদের। বায়ুর মাধ্যমেই এই সমস্ত ক্ষেত্রে সংক্রমণ হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
গবেষকদের এই দাবি যদি সত্যি বলে প্রমাণিত হয়, তা হলে কোভিডের সুরক্ষাবিধিতে বড়সড় বদলের সম্ভাবনা। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, এই ধারণা প্রমানিত হলে বদলাতে পারে মাস্ক পরার ধরন ধারণও। এত দিন শুধুমাত্র বাড়ির বাইরে বেরোলেই মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু জীবাণু যদি পুরোপুরি বায়ুবাহিত হয়, তা হলে ঘরের মধ্যে সব সময়ই মাস্ক পরে থাকতে হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি ঘুমোনোর সময়ও মাস্ক পড়তে হবে সেক্ষেত্রে।