ছোটো থেকেই আমরা শুনে আসছি মন দিয়ে পড়াশোনা করলে ভালো চাকরি পাওয়া যায়। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে দেখা যাচ্ছে, যে যতই পড়াশোনা করুক না কেন চাকরি পাওয়া ভীষণ কষ্টকর। যাদের চাকরি নেই তাদের কথা নাহয় ছেড়েই দিলাম কিন্তু যাদের চাকরি আছে বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদেরও চাকরি চলে যাচ্ছে। আজ আমরা আপনাদের এমন একজনের কথা বলব যাকে ছোটো থেকেই অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তা সে শারীরিক দিক দিয়ে হোক বা আর্থিক দিক দিয়ে।
প্রত্যেকের বাবা-মা’ই চায় তাদের সন্তান যেন পড়াশোনা করে ভালো চাকরি পায়। ভালো চাকরি পাওয়ার জন্য বাবা-মায়েরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে সন্তানের পড়াশোনার পিছনে। এমনই অক্লান্ত পরিশ্রম শিবপ্রসাদ মিশ্রের বাবা-মাও করেছিলেন। শিবপ্রসাদের বাড়ির আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তবুও তার বাবা ছেলের পড়াশোনায় কোনো খামতি রাখেননি। তার একার উপার্জনে ভালভাবে সংসার খরচ ই চলে না কিন্তু তাও তিনি ছেলে কে পড়িয়েছেন।
শিবপ্রসাদ 52% মার্কস নিয়ে স্নাতক পাস করেন, এরপর তিনি সংস্কৃততে এমএ করেন। তার বাবার একার পক্ষে সংসার চালানো সম্ভব না হওয়ায় সে চাকরির জন্য চেষ্টা করে। বহু চেষ্টার পরেও সফলতা সে পায় না। তাই বাবাকে সাহায্য করার জন্য তিনি বেছে নেন হকারি। এই এমএ পাস করা ছেলেটি আজ ট্রেনের হকার। শিব প্রসাদ আর পাঁচটা মানুষের মত স্বাভাবিক ছন্দে চলতে পারে না।
মাত্র তিন বছর বয়সে তার কোমরের হাড় ভেঙে যায় তারপর থেকেই হাতে ভর দিয়ে তাকে চলতে হয়। এত কষ্ট করেও সে এতদিন ট্রেনের হকারি করে আসছিল। কিন্তু লকডাউনে ট্রেন বন্ধ থাকায় তার রোজগারও বন্ধ। অনেকেই তাকে ট্রেনে ধূপকাঠি বেচতে দেখেছেন। এক নিঃশ্বাসে তিনি তার কাছে পাওয়া ধূপকাঠি গুলির গুনাগুন আওড়ে যেতেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে বিগত কয়েক মাস ধরে এইসবই বন্ধ।
শিবপ্রসাদ জানান তিনি তার অবস্থার কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি কে চিঠি লিখেছিলেন কিন্তু সেখান থেকে কোনো উত্তরই পাওয়া যায়নি। এরপর তিনি শুভেন্দু অধিকারী কেউ চিঠি লেখেন তবে সেই চিঠির উত্তরে একটিমাত্র সাইকেল ছাড়া আর কিছুই তিনি পাননি। হতাশ হয়ে তিনি আর কাউকেই চিঠি লেখেন নি। আপনাদের কাছে একান্ত অনুরোধ শিবপ্রসাদ এর মত কাউকে যদি কোনৌ জিনিস বিক্রি করতে দেখেন তবে তাদের সাথে দরদাম করবেন না বরং অল্প কিছু হলেও কিনে নেবেন।