চোখ বন্ধ করেও চেনা যায় কর্পূরের গন্ধ। আমরা প্রায় সকলেই এ কথা জানি যে, কর্পূরের (ভোজ্য) ব্যবহার করা হয় পুজো-পাঠ বা খাবারের সুগন্ধ বাড়াতে। কর্পূর হল একটা রাসায়নিক যৌগ যা কর্পূর গাছের ছাল থেকে প্রাপ্ত প্রাকৃতিকভাবে ঘটা।‘সিনামোনান ক্যাম্ফরা’ বিজ্ঞানসম্মত নাম । আমরা চলতি কথায় তাকেই কর্পূর বলে চিনি। কর্পূর গাছ জন্মায় ভারত, জাপান সমেত প্রায় গোটা এশিয়া জুড়েই। কর্পূরের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে পুজো থেকে ঘরোয়া বেশ কিছু কাজে। আমরা অনেকেই জানি না কর্পুরের ব্যবহার সম্পর্কে। এই উপাদানটি কেবল ঘরোয়া কাজেই নয়, বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দূর করতেও বেশ উপযোগী। জেনে নিন কি কি….
চুল পড়া প্রতিরোধে:
কর্পূর একেবারে অব্যর্থ একটি উপাদান অতিরিক্ত চুল ঝরা রোধ করতে আর খুশকির সমস্যা দূর করতে। চুল ঝরার পরিমাণ অনেকটাই কমে যাবে নিয়মিত মাথায় মাখার তেলের সঙ্গে কর্পূরের গুঁড়ো মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারলে। খুশকির সমস্যাও দ্রুত কমবে চুলে শ্যাম্পু করার আগে এই তেলের মিশ্রণ মাথার তালুতে আর চুলের গোড়ায় মাখতে পারলে।
ত্বকের বার্ধক্য রোধ:
কর্পূর বিভিন্ন ত্বকের রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে ঐতিহ্যগতভাবে, যেমন ত্বকের অ্যালার্জি এবং সংক্রমণ। একটা উৎকৃষ্ট বার্ধক্য-প্রতিরোধী যৌগ বিবেচনা করা হয় এটাকে। বস্তুতঃ, বিভিন্ন ধরণের ক্রিম এবং লোশন প্রস্তুত করতে ব্যবহার করা হয় কর্পূর যা লড়াই করে বার্ধক্যের লক্ষণগুলির বিরুদ্ধে, যেমন কুঞ্চন এবং কালো দাগ। যদি আপনার ত্বকে চুলকানি ও র্যাশের সমস্যা হয়, তাহলে কর্পুর অত্যন্ত কার্যকরী এক্ষেত্রে। নিন এক টুকরো ভোজ্য কর্পুর এবং সামান্য জলের সঙ্গে মেশান। এই দ্রবণ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন আক্রান্ত স্থানটিতে। কমে যাবে চুলকানি ও র্যাশের সমস্যা। কিন্তু কখনোই কর্পুর ব্যবহার করবেন না কাটা বা ক্ষত স্থানে। কারণ শরীরে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হতে পারে কর্পুর রক্তের সঙ্গে মিশে গেলে ।
অনিদ্রার সমস্যায়:
ঘুম ডেকে আনতে সাহায্য করে কর্পূরের গন্ধ। যাঁরা ইনসমনিয়ায় ভোগেন,কয়েক ফোঁটা কর্পূরের তেল ঘুমোনোর আগে বালিশে দিয়ে ঘুমোলে অনিদ্রার সমস্যা কমে।
সর্দি বা কফের সমস্যায়:
কর্পূরের সাহায্য নিতে পারেন সর্দিতে নাক বন্ধ হয়ে গেলে বা বুকে কফ জমে গেলে । বন্ধ নাক ছেড়ে যাবে কর্পূরের গন্ধে। আন্দাজ মতো কর্পূর মিশিয়ে সামান্য গরম করে নিন সরষের তেল বা নারিকেল তেলের সঙ্গে । উষ্ণ অবস্থাতেই বুকে, পিঠে ভাল করে এই তেলের মিশ্রণটি মালিশ করতে পারলে দ্রুত আরাম পাওয়া যাবে।