আপনিও কি বিয়ারের গ্লাসে চুমুক দিতে ভালোবাসেন? পৃথিবী জুড়ে কত নামী দামী ব্র্যান্ডের বিয়ারই না আছে যাতে মজেন বিয়ার প্রেমীরা। কিন্তু সাবধান। এই ব্র্যান্ডের বিয়ার পানের চ্যালেঞ্জ নেওয়ার আগে সতর্ক হওয়া বাঞ্ছনীয়। স্নেক ভেনোম (Snake Venom), ইংল্যান্ডের বিয়ার প্রস্তুতকারী কোম্পানি ব্রিউমিস্টারের (U.K. brewing company Brewmeister) তৈরী করা এমন একটি বিয়ার যার পুরো বোতল পান করলে অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন বশত হয়ে যেতে পারে মৃত্যুও। স্নেক ভেনম বিয়ার বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বিয়ার। এই বিয়াররের এবিভি বা অ্যালকোহল বাই ভলিউম (ABV) ৬৭.৫ শতাংশ। অর্থাৎ পানীয়তে উপস্থিত আলকোহলের পরিমাণ ৬৭.৫ ভাগ। এই অ্যালকোহল কতোটা বেশী এটা বোঝার জন্য তুলনা টানার জন্য বলা যেতে পারে বেশিরভাগ মদ, যেমন ভদকা এবং হুইস্কির, ইত্যাদি কড়া মদে অ্যালকোহলের পরিমান থাকে ৪০ শতাংশের কাছাকাছি।
এর আগে সর্বাধিক কড়া বিয়ার হিসাবে যাকে জেনে এসেছে বিশ্বের সকলে, সেই অ্যাবসিন্থে অ্যালকোহলের পরিমাণ ছিল ৬০ শতাংশ। আর সেইখানে এই স্নেক ভেনম বিয়ার -এ অ্যালকোহলের পরিমাণ ৬৭.৫০ শতাংশ! এত বেশি মাত্রায় অ্যালকোহল মানব শরীরের পক্ষে বিষের মতোই প্রায় কাজ করবে সে কথা বলাই বাহুল্য। অ্যালকোহলের এই মাত্রার কথা মাথায় রেখেই এই বিয়ারের নাম রাখা হয়েছে স্নেক ভেনম। এতো মারাত্মক পরিমাণে অ্যালকোহল থাকার কারণে শরীরের জন্যে ক্ষতিকর হওয়ার জন্যই বিয়ারের বোতলের গায়ে প্রস্তুতকারী সংস্থা দিয়ে রেখেছে স্বাস্থ্য বিষয়ক বিধিসম্মত সতর্কীকরণও। সেই সতর্কীকরনে এও স্পষ্ট বলা রয়েছে, একসঙ্গে এই বিয়ার ৩৫ মিলিলিটারের বেশি খাওয়া নিষিদ্ধ। অতিরিক্ত মদ খেয়ে যাতে কোনও রকম দুর্ঘটনা না ঘটে তাই একসঙ্গে এই বিয়ারের একটি বোতলের (২৭৫ মিলিলিটার) বেশি বিক্রিও নিষিদ্ধ।
এই বিয়ার প্রস্তুতকারী কোম্পানি ব্রেমিস্টারের একজন মুখপাত্র জানান ” এই অ্যালকোহলের তরলটি খুব ঘন এবং তাই এটি অন্যান্য বিয়ারের মতো বুদবুদগুলিকে ধরে রাখতে পারে না”। এই স্নেক ভেনম বিয়ার পৃথিবীর বেশীরভাগ বিয়ারের থেকে প্রায় ১৫ গুন বাড়ানো যায়।
কীভাবে বানানো হয় এই বিয়ার?
দু’রকমের ইস্ট আর পিট মল্ট দিয়ে তৈরি হয় এই অ্যালকোহলের প্রাথমিক মিশ্রণ। তারপর এই মল্টকে বেশ কয়েকবার জমিয়ে কঠিনে পরিণত করা যাতে মিশ্রণের থেকে জলীয় অংশ আর অ্যালকোহলকে আলাদা করা হয়। জলের আর অ্যালকোহলের জমাট বাঁধার হিমাঙ্ক আলাদা হওয়ায় খুব সহজেই এই পদ্ধতিতে আলাদা করা সম্ভব। এই ভাবে যত বার জমাট কঠিনে পরিণত করতে থাকা হয় তত বেশি পরিমাণ জল বরফে পরিণত হয়ে বাদ পড়তে থাকে এবং মিশ্রণ থেকে জলের পরিমাণ কমে যেতে যেতে পাশাপাশি বাড়তে থাকে অ্যালকোহলের পরিমাণ। এই ভাবে বেশী ঘনত্ব যুক্ত বিয়ার তৈরী হয়। এই ভাবে ক্রমে কড়া ঘনত্বের সবচেয়ে কড়া অ্যালকোহল তৈরী হয়।
এই বিয়ার নাকি এতটাই বেশী কড়া যে, মুখের কাছে আনার অনেক আগে অ্যালকোহলের গন্ধেই নেশা ধরে যাবে। হালকা একটা ফলের গন্ধও পাওয়া যাবে পান করার সময়।