Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
ট্রেন্ডিং

চারপেয়ে মানুষ! সত্যিই এই গ্রামের মানুষেরা এখনও বানরের মতন হাঁটেন চার হাত-পায়ে! কেন

চারপেয়ে পশুর থেকেই এসেছে আজকের দুই পায়ে হেঁটে বেড়ানো মানুষ। কোটি কোটি বছরের পৃথিবীর জীবজগতের বিবর্তনের ইতিহাস অনুযায়ী, বর্তমান সময়ের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ বছর পূর্বে মানুষ চার পায়ে দু’পায়ে হাঁটতে শিখেছে। কিন্তু জানেন কি, এখনও তুরস্কে রয়েছে একটি গ্রাম যেখানে আছে এমন কিছু মানুষের বাস যারা আজ পর্যন্ত সোজা হয়ে মানুষের মতন দাড়াতে জানেন না। ওই দেশের একটি দুর্গম প্রদেশের একটি গ্রামে, কিছু মানুষ এমন আছেন যারা সোজা হয়ে দাড়াতেই পারেন না। চার হাত-পায়ে বন্য জন্তু বিশেষত বানর বা শিম্পাঞ্জির মতোন করে হাঁটেন তাঁরা। কিন্তু এইভাবে কেন হাঁটেন তারা। মানুষ হয়েও কেন দুই পেয়ে দাড়ালেই তাদের শরীরের সমতা বজায় রাখা কঠিন হয়, কেনই বা ওই মানুষেরা বাধ্য চার হাত-পায়ে হাঁটতে? কী তাঁদের অসুবিধা? মানুষের বিবর্তনের বিজ্ঞানের প্রতি প্রশ্ন তোলে তাদের এমন ভাবে হাঁটা। বিষয়টি প্রথমে নজরে আসে তুরস্কেরই একদল বিজ্ঞানীর। তারা এই নিয়ে গবেষণা শুরু করলে আস্তে আস্তে তা বিশ্বের অন্যান্য বিজ্ঞানীদেরও নজরে আসে। শুরু হয় বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষা।

তুরস্কের দুর্গম এক পাহাড়ি জায়গায় ইলনেস নামক এক ব্যাক্তি ও তাঁর স্ত্রীর ১৮ জন সন্তান রয়েছে। এদের মধ্যে ছ’জনেরই একটি বিশেষ ধরনের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, যার কারণে সোজা হয়ে দু’পায়ে দাড়াতে পারেন না তাঁরা। পরবর্তীতে প্রতিবন্ধী যারা তাদের সন্তানদের মাঝেও দুই পায়ে হাঁটতে না পারার একই সমস্যা দেখা দেয়।

শুরুর দিকে অনেকের অনুমান দাড়ায় এই যে এইসব মানুষেরা দু’পেয়ে মানুষ ও চার পেয়ে বন্যপ্রাণীর মধ্যবর্তী পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু বিবর্তনবাদ বলে এমনটা হওয়ার কথা নয়। কারণ ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ বছর আগে মানুষ এই বিবর্তনের সময় পেরিয়ে এসেছে। তাহলে কি এই তুরস্কের প্রদেশের এই চার পেয়ে মানুষদের ক্ষেত্রে বিবর্তন বিপরীত দিকে হাঁটছে?

বহু পরীক্ষা নিরীক্ষার পর মানুষদের চার হাত-পায়ে হাঁটার কারণ তুলে ধরা হয়েছে।তাঁদের মস্তিষ্কে স্ক্যানও করেন গবেষকেরা। এতে দেখা যায়, তাঁদের মস্তিষ্কের সেরেবেলাম নামক একটি অংশে বড় সমস্যা
রয়েছে। কারণ পৃথিবীর আরো জায়গায় এই সমস্যা নিয়ে অনেকেই সোজা হয়ে হাঁটতে পারেন। তাহলে? মস্তিষ্কের সমস্যার সঙ্গে, এই মানুষগুলির জিনের কিছু সমস্যাও রয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। জানা গেছে এটি একটি বংশভিত্তিক শারীরিক বিকৃতি। আর যেহেতু ওই গ্রামবাসীরা সকলে একই পরিবারের বা বংশের মানুষ, তাই প্রায় প্রত্যেকেই এই বিকৃতির শিকার।

এরপরেই ফিজিওথেরাপিস্ট ও আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে ওই মানুষগুলিকে সঠিক পদ্ধতিতে হাঁটা শেখানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে যাদের বয়স বেশি তারা দীর্ঘদিন চার হাতপায়ে হাঁটার ফলে আজ আর ঠিক করা সম্ভব হচ্ছে না। যদিও অল্পবয়সী যারা এই সিনড্রোমে আক্রান্ত তাঁদের সঠিক প্রশিক্ষণ দিয়ে সোজা হয়ে হাঁটার অভ্যাস করা সম্ভব হচ্ছে আস্তে আস্তে।

Related posts

আবারও কমলো দেশের করোনা সংক্রমণ, বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে বুস্টার ডোজ

News Desk

প্রেম নাকি কামনা? কিসে আপনার আকর্ষণ বেশি? জেনে নিন

News Desk

যেখানে ‘সুপার স্প্রেডার’, সেখানেই টিকাকরণ, শহরে চালু ‘ভ্যাকসিনেশন অন হুইল’

News Desk