ভারতবর্ষ যতই ডিজিটাল হোক, সমাজের অভ্যন্তরে যে কুসংস্কার আর অন্ধবিশ্বাস কতোটা প্রকট তার নিদর্শন মেলে এখনও বহু মানুষের মধ্যে পুত্র সন্তানের আকাঙ্খা দেখলে। এর জন্য চূড়ান্ত অমানবিক কাজ করতেও পিছপা হননা কিছু মানুষ। তার জলন্ত উদাহরণ আবার মিলল মহারাষ্ট্রের পুনেতে। আগের দুই সন্তানই মেয়ে সন্তান। তাই পর পর দুই মেয়ের বাবা হওয়ার সে আর কিছু শুনতে রাজি নয়। স্ত্রী কে ছেলের জন্ম দিতেই হবে। অত্যাচার তো চলতই। এছাড়াও ছেলের জন্য তান্ত্রিকের কাছে চাওয়া হল বিধান। আর তার উপদেশ মতোই দুই মেয়ের মা ওই মহিলাকে নগ্ন করে তাঁর সারা শরীরে জোর করে মাখানো হল তান্ত্রিকের দেওয়া ছাই। কুকর্মের ভাগিদার মহিলার স্বামী ও শ্বাশুড়ি। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে পুনে পিম্পরি-চিঞ্চওয়াড় থানা এলাকায়। সেখানকার মহালাং পোস্টে এই কাজ করার জন্য নিজের স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন নির্যাতিতা ওই মহিলা। যে তান্ত্রিকের কাছ থেকে ওই ছাই এনেছিল মহিলার স্বামী, অভিযুক্তদের তালিকায় সেই তান্ত্রিকের নামও রয়েছে।
নিগৃহীতার অভিযোগ, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তার উপর অত্যাচার চালাতো স্বামী এবং শাশুড়ি। তাদের প্রথম সন্তান মেয়ে জন্মানোর পর সেই অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে। যা নয় তাই বলে গালিগালাজ, গায়ে হাত তোলা সবই চলত। দ্বিতীয় বারও মেয়ে সন্তান জন্মের পর অত্যাচারের মাত্রা চূড়ান্ত আকার নেয়। পেটে লাথি অবধি মেরেছিল ওই মহিলার স্বামী। স্বামী ও শাশুড়ির অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে বাপের বাড়ি পর্যন্ত চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন নির্যাতিতা। তবে আগস্ট মাসে তাকে আবারও ফিরিয়ে নিয়ে আসে তার স্বামী। শ্বশুরবাড়ি নিয়ে এসে তাকে তান্ত্রিকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তান্ত্রিকের বিধান মতন সেখান থেকে ফিরেই তার উপর আবার শুরু হয় অত্যাচার। জোর করে তাকে নগ্ন করে তার স্বামী এবং শাশুড়ি। পুত্রসন্তান এর আশায় সারা শরীরে তান্ত্রিকের থেকে নিয়ে আসা ছাই লাগিয়ে দেওয়া হয়। আর সহ্য না করতে পেরে পুলিশের কাছে নালিশ করেন ওই মহিলা। পুলিশ নিপীড়িত ওই মহিলার শাশুড়ি ও অভিযুক্ত তান্ত্রিককে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে। তবে ঘটনার পর থেকে মহিলার স্বামী ফেরার। তাঁর খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।