হঠাৎ করে দেখলে মনে হবে যেন দীঘার সমুদ্র। কুল ছাপানো জল, এমনকি ঢেউও উঠছে সেই জলে। সেখানে আগ্রহে ভীড় জমিয়েছেন উৎসাহী মানুষ। সকাল থেকে সন্ধ্যা কেউবা ব্যস্ত সেলফি তুলতে, আর কেউ কেউ সেই জলের ভাঙ্গা ঢেউয়ে স্নান করতে ব্যস্ত। মালদার মিনি দীঘা হিসাবে পরিচিত সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাটরা বিলের ছবিটা এখন এরকমই। দীঘা না যেতে পারলেও তার কিছুটা সাধ এই বিলেই মেটাচ্ছেন বহু মানুষ। তাই এই বিলের লোকের মুখে নাম হয়েছে মিনি দীঘা হিসাবে। কয়েকশ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত এই বিল এখন এই জেলা আর আশেপাশের মানুষের কাছে আকর্ষনের কেন্দ্র।
মিনি ‘সমুদ্র’ মালদার ভাটরা বিল এলাকার কিছু মানুষের আয় রোজগারের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। সেখানেই রাতারাতি গড়ে উঠেছে খাবারের দোকান, চায়ের দোকান, শিশুদের খেলনা– ইত্যাদি যাবতীয় সরঞ্জামের দোকান। গড়ে উঠেছে গাড়ি রাখার স্ট্যান্ড। সব মিলিয়ে রোজগারের অনেক বন্দোবস্ত।
পুরনো মালদা ব্লকের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাটরা গ্রামটিতে মুলত আদিবাসীদের বাস। ভাটরা গ্রামে কয়েক হাজার একর অনুর্বর জমি বছরের অধিকাংশ সময় শুকনো খটখটে অবস্থায় পড়ে থাকে। আর এই ভাটরা বিলের কিছুটা দূর দিয়ে বয়ে গিয়েছে টাঙন নদী।
বর্ষার সময় এই ভাটরায় জমিতে ওই নদীর জল ঢুকে পড়ে। একরের পর একর জমিতে জল থৈ থৈ করে। এমনকি জলে উঠছে ভাঙ্গা ঢেউও। মুলত এত একরের পর একর জমি ধুধু পরে থাকায় জোরে হাওয়া চলে আর তাতেই জলাশয়ে ভাঙ্গা ঢেউ সৃষ্টি হয়। তাই এই মিনি দিঘার স্বাদ পেতে জেলার মানুষ ছাড়াও বহু দূর দূরান্তের ভ্রমণ পিপাসু মানুষেরা এই ভাটরা বিলে চলে আসছে। তাদের কথায় পুরো যেন মনে হয় দীঘার সমুদ্র সৈকত। বড় বড় ওঠা ঢেউ দেখতে বিলের পারে ভিড় করছেন বহু মানুষ। তাই জন্য পুরো মালদা জুড়ে এর নাম মিনি দীঘা বলেই প্রচলিত। মালদা ইংরেজবাজার থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে এই ভাটরা বিল। যার এই কূল থেকে ওই কূল জলে ঢেউ উঠতেও দেখা যাচ্ছে। অনেকটাই যেন সমুদ্রের আবহ। ছুটির দিন তো বটেই, এর বাইরে প্রতিদিনই ভাটরা গ্রামে সমুদ্র সৈকতের আনন্দ নিতে ছুটে যাচ্ছেন অনেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এইসব ছবি রীতিমত ভাইরাল। বর্ষা পেরিয়ে গেলে জল নেমে গেলে এই সমুদ্রের দৃশ্য নাও দেখা যেতে পারে, এটা ভেবেই ভিড় আরও বাড়ছে বর্ষা বিদায় নেওয়ার আগেই।