ট্রেন যাত্রার ইতিহাসে ঘটল এক চমকে দেওয়ার মতো ঘটনা। নামার কথা ছিল এক স্টেশনে কিন্তু রীতিমত সেই স্টেশন পার করে রাজ্য পার করে ট্রেন গিয়ে থামল আরেক রাজ্যের স্টেশনে। নামার জন্য প্রস্তুত যাত্রীরা এতে ভীষণ হকচকিয়ে যান। কিংকর্তব্যবিমূর হয়ে পড়েন নিউ আলিপুরদুয়ারের নামার জন্য প্রস্তুত থাকা ৬১ জন যাত্রী। যাওয়ার কথা এক জায়গায় ছিল । আর নিয়ে থামল আরেক জায়গায়। শোরগোল পড়ে গেল এই ঘটনায়। সৌজন্যে রাজধানী এক্সপ্রেস।
নিউ আলিপুরদুয়ারের থামলোই না ট্রেন। যাত্রীরা পৌঁছে গেলেন অসমের এক স্টেশনে এই আচমকা রুট বদলে ফেলার জেরে। ট্রেনে থাকা যাত্রীরা কল্পনাও করতে পারেননি এমনও যে হতে পারে। তবে যখন দেখলেন পরিবার নিয়ে অসমে এসে পৌঁছেছেন, তখন ঘোর কাটল। তাতে রাজধানী এক্সপ্রেসে থাকা ৬১ জনকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হলো ।
রেল সূত্রে খবর, হঠাৎ নির্ধারিত নিউ কোচবিহার ও নিউ আলিপুরদুয়ারের মেইন রুটে না গিয়ে অসমের গোলকগঞ্জ রুটে চলে যায় নয়াদিল্লি থেকে ডিব্রুগড়গামী স্পেশাল রাজধানী এক্সপ্রেস। সুতরাং নির্দিষ্ট গন্তব্যে নামতে পারেননি যাত্রীরা। অনলাইনে লিখিত নালিশ ঠুকেছেন উত্তর–পূর্ব সীমান্ত রেলের এই গাফিলতির বিরুদ্ধে। তাতে আরও বেড়েছে রেলের অস্বস্তি। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে, এটা কী ভুল? নাকি এমন ঘটানো হয়েছে ইচ্ছে করেই? কি করে এই ঘটনা ঘটল?
এই নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ সেভাবে মুখ খুলতে চায়নি। বরং বিষয়টি ধামাচাপা দিতে যাত্রীদের কেছে দুঃখপ্রকাশ করে নিজেদের দায়িত্বে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে অসমের ফকিরাগ্রাম স্টেশন থেকে আলিপুরদুয়ারের সমস্ত যাত্রীদের। রেলের পক্ষ থেকে ভাবা হয়েছিল কাক–পক্ষী টের পাবে না বিষয়টি নিয়ে। কিন্তু যাত্রীদের কাছ থেকেই তা চাউর হয়ে যায়। তখন এই নিয়ে বাধ্য হয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রেল।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াদিল্লি থেকে নিউ কোচবিহার স্টেশনে পৌঁছয় ডিব্রুগড়গামী স্পেশাল রাজধানী এক্সপ্রেস। তার ২০ মিনিটের মধ্যেই তা পৌঁছে যাওয়ার কথা নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে। কিন্তু ট্রেনটি অন্য ট্র্যাক ধরে ফেলে নির্ধারিত রুটের পরিবর্তে। যাত্রীদের অসন্তোষ প্রকাশ পায় চলন্ত ট্রেনের মধ্যেই। যাত্রীরা এই হয়রানির বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে এফআইআর পর্যন্ত করেন। তারপর আলিপুরদুয়ারের যাত্রীদের অসমের ফকিরাগ্রাম স্টেশনে নামতে হয়।
এই বিষয়ে উত্তর–পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘ ওই বিপত্তি ঘটেছে জরুরি ভিত্তিতে মেইন রুটে ব্লক নেওয়ার ফলে। সত্যিই আমরা দুঃখিত। গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ভোগান্তিতে পড়া যাত্রীদের। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’ ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে যাত্রীদের অনেকেই বলেছেন, ‘শিশু সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েছিলাম। এখন নিরাপত্তার অভাববোধ করছি। মাথা কাজ করছে না। এই যদি পরিষেবার হাল হয় তাহলে কাকে বিশ্বাস করব।’