অরুণাচল প্রদেশের তরুণ প্রজন্মকে চিন চাইছে তাঁদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করতে, এই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন অরুণাচল প্রদেশের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ নিনং এরিং।
লোকসভার প্রাক্তন সাংসদ (MP) নিনং এরিং (Ninong Ering) এই মর্মে দাবি করেছেন যে তাঁর কাছে যে খবর রয়েছে তা ১০০ শতাংশ সত্যি। চিন সরকার তাঁদের পিপলস লিবারেশন আর্মি (People’s Liberation Army) বা পি এল এ (PLA)-তে অরুণাচল প্রদেশের যুবকদের নিযুক্ত করতে চেষ্টা চালাচ্ছে। সম্প্রতি চীন তিব্বতের যুবকদেরও চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মিতে নিয়োগ করতে চলেছে। প্রাক্তন সাংসদ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা খুবই দুশ্চিন্তার এবং উদ্বেগের। তিনি বলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এর উচিৎ চীনের এই পদক্ষেপের ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
নিনং এরিং আরও দাবি করেছেন, চিন সীমান্তে অরুণাচল প্রদেশের বিভিন্ন উপজাতির লোকেদের বসবাস। নিশি, মিশমি, আদি, ইদু ইত্যাদি জাতির লোকেরা বাস করেন চীনা সীমান্তের কাছাকাছি অরুণাচলের গ্রামগুলিতে। এই সব জাতি-উপজাতির মানুষের সঙ্গে চিনের লোহবা উপজাতির মানুষদের অনেক মিল এবং সম্পর্ক আছে। তিনি বলেন, ‘ভারত-চীন সীমান্তে যেসব অরুণাচলি মানুষ বসবাস করেন তাঁদের সঙ্গে চিনের লোহবা সম্প্রদায়ের মানুষের ভাষার এবং অন্যান্য মিল আছে। কিন্ত এর মানে এটা একদমই নয়, যে এই সীমান্তবর্তী অঞ্চলের মানুষেরা চিনের লিবারেশন আর্মিতে যোগ দেবেন।’
সম্প্রতি লাদাখে ভারত চীন সংঘর্ষের মাঝেই চিনা প্রশাসন অরুণাচলপ্রদেশের কাছে নির্মাণ করেছিল বাড়ি ঘর। চিন এই সীমান্ত এলাকার বিসাতে বাড়ি এবং গেহলিং ও আনিন-তে রাস্তা নির্মাণ করেছিল। আর তারপর মাত্র একমাস আগেই অরুণাচলপ্রদেশ সীমান্তের একেবারে কাছে তিব্বত থেকে তৈরী হয়েছে চিনা বুলেট ট্রেনের লাইন। এই রেললাইন স্থাপনার ফলে তিব্বতের রাজধানী লাসা থেকে ভারত অরুণাচল সীমান্তের কাছে অবস্থিত চিনা শহর নিনচি পর্যন্ত পৌঁছতে বুলেট ট্রেনে সময় লাগবে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টা। এই ট্রেন পরিষেবা চালু করার উদ্দেশ্য -এ এই ভারত সীমান্তে সেনা সরবরাহ করতেই বলে জানা গিয়েছে।
এই সিচুয়ান-তিব্বত রেল লাইন বসানোর কাজ কতদূর এগিয়েছে তা খতিয়ে দেখতে গত জুলাই মাসে তিব্বত সফরে গিয়েছিলেন স্বয়ং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনিং। আর এরই মধ্যে এই ট্রেনে করে সেনা নিয়ে আসা শুরুও হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গত ২৫ জুন থেকে চীন অধিকৃত তিব্বতের এই রাজধানী লাসা থেকে চীনের নিনচি রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এর কিছু দিনের ভেতরেই সামনে এল এই বুলেট ট্রেন লাইনের দ্বারা ভারত নিকটবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেনা পৌঁছনোর বন্দোবস্ত করছে চিন।
অরুণাচল প্রদেশের এই কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘আমাদের দেশের সীমান্তকে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের রক্ষা করতে এখনই প্রয়োজন উপযুক্ত ব্যবস্থার। একই সঙ্গে এই এলাকার যুবকদের যাতে কোনওভাবেই অন্য দেশের কোনো প্রতিনিধি প্রভাবিত না করতে পারে কোনো বাহিনীতে যোগ দিতে সেটাও দেখা উচিত।’