করোনার দাপটে নাজেহাল গোটা দেশ। এর মধ্যেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে জিকা ভাইরাসের কেস সনাক্ত হওয়ায় নতুন করে চিন্তা বাড়ছে কেন্দ্র সরকারের। কেরলের পর এবার মহারাষ্ট্রও জিকা ভাইরাসের কেস সনাক্ত হওয়ার খবর এসেছে শনিবারই। ৫০ বছর বয়সী এক মহিলার শরীরে এই ভাইরাসের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তিনি পুনের বেলসর গ্রামের পুরন্দর এলাকার বাসিন্দা। ১৫ জুলাই হঠাৎই জ্বর আসে ওই মহিলার। তার সঙ্গে গায়ে ব্যথাও ছিল। একাধিক ওষুধ খাওয়ার পরও জ্বর সারছিল না। তারপর তাঁর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ৩০ জুলাই সেই রিপোর্ট আসে। জানা যায় তিনি জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির তরফে এই পরীক্ষা করা হয়েছিল। এছাড়াও আরও একটি কেস শনাক্ত হয়েছে বলে খবর।
জিকা ভাইরাস কী
ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার মতোই জিকা ভাইরাসও মশাবাহিত একটি ভাইরাস। জানা যাচ্ছে, যে এডিস মশার কারণে ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়া প্রভৃতি রোগ ছড়ায়, সেই এডিস মশাই জিকা ভাইরাস বহন করে।
১৯৪৭ সালে আফ্রিকাতে প্রথম জিকা ভাইরাসের স্ট্রেইন দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এই ভাইরাস প্রথম নজরে আসে ২০১৫ সালে যখন তা ব্রাজিলে পাওয়া যায়। এরপর ধীরে-ধীরে এই জিকা ভাইরাস ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাসটি সাধারণত ভাইরাসে আক্রান্ত এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এছাড়া, যৌন সংসর্গের মাধ্যমেও এই ভাইরাস ছড়ায়। ২০১৬ সালে হু জিকা ভাইরাসকে পাবলিক হেলথ এমার্জেন্সি হিসেবে চিহ্নিত করে।
কতটা ভয়ের?
কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলার জিকা হলে তা মারাত্মক, কারণ তাহলে গর্ভস্থ শিশুটির মাইক্রোসেফালি হতে পারে। গর্ভবতী মহিলা ছাড়া জিকা অন্যান্যদের ক্ষেত্রে তেমন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে না। তবে ব্রাজিলে জিকা মহামারির সময় দেখা যায় গিলান-বারে সিনড্রোম ( Guillain-Barré syndrome) জিকা বাড়িয়ে তুলছে। গিলান-বারে সিনড্রোমের ফলে প্যারালাইসিস হতে পারে। যা ডেকে আনতে পারে মৃত্যুও। কিন্তু সেভাবে জিকা ভাইরাস ভয়ঙ্কর নয়। আপাত ভাবে নিরীহ অসুখ। কখনও তা-ই প্রাণঘাতী। জিকার বার্তা এমনই। তাই জিকার হাত থেকে বাঁচতে নিজেকে মশার কামড় থেকে বাঁচান।