হিন্দু যুবককে অত্যাচার এবং ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা সম্পর্কীয় মন্তব্য করতে বাধ্য করায় এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পাকিস্তানের পুলিশ। কিছুদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে একটি ভাইরাল ভিডিয়ো, ভিডিওটিতে দেখা যায় পাকিস্তানী নাগরিক এক হিন্দু যুবকের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে আরেক পাকিস্তানি ব্যক্তি। তাঁকে জোর করে বাধ্য করা হচ্ছে হিন্দু দেব-দেবীর নামে কুকথা বলার জন্য। হিন্দু যুবকটি বার বার কাকুতি মিনুতি করলেও, তার অনুরোধে উপরোধে মন গলেনি অত্যাচারী ব্যাক্তির। রেহাই তো মেলেইনি, এমনকী সেই হিন্দু যুবককে জোর করে ‘আল্লাহু আকবর’ বলতেও বাধ্য করা হয়। পরবর্তীতে জানা যায় ওই ব্যক্তিটির আব্দুল সালাম। সম্প্রতি তাঁর এই ভিডিও ঘিরে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে পাকিস্তানের পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে অত্যাচারী ওই ব্যক্তিকে সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর অভিযোগে।
এই ভিডিয়োটি গত সপ্তাহে বুধবার রাতে নেট মাধ্যমে পোস্ট করা হয় এবং বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যেই তা রীতিমত ভাইরাল হয়ে যায়। এক নিরীহ হিন্দু যুবককে এই ভাবে অত্যাচার করায় নিন্দার ঝড় ওঠে নেট নাগরিকদের মধ্যে। জানা যাচ্ছে যে যুবক এর উপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে সেই যুবক পাকিস্তানের থারপারকর এলাকার বাসিন্দা। পাকিস্তানের থারপারকর এলাকায় বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৬ লাখ। এর মধ্যে হিন্দু এবং মুসলিম ধর্মালম্বীদের সংখ্যা প্রায় কাছাকাছি। এই জেলায় মানুষের মধ্যে যথেষ্ট ভাবেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে এবং প্রত্যেকেই ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মিলে মিশে থাকেন এবং একে অপরের বিপদে অপদে পাশেও দাড়ান বলে দাবি পাকিস্তানি নেতাদের। তাই এই হিন্দু যুবকের উপর এহেন অত্যাচারের সমস্যায় এগিয়ে আসেন পাকিস্তানের এই জেলার বাকি বাসিন্দারাও। অবিলম্বে দোষী ওই ব্যাক্তি আব্দুল সালামের শাস্তির দাবি করেন তাঁরা।
পাকিস্তান পুলিশের জানায়, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত যে ব্যাক্তি আব্দুল সালাম তাকে গ্রেফতার করার সময় সে পুলিশের হাত থেকে পালানোর চেষ্টা করে। পরে তাকে বাজিন জেলা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের পুলিশ। অভিযুক্ত ওই ব্যাক্তির মোবাইল ট্রাক করে তার হদিশ পাওয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে পাক পুলিশ। জানা গিয়েছে, এই প্রথমবার নয়, এর আগেও হিন্দু ধর্ম নিয়ে সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়ানোর উদ্দেশ্যে একাধিক ভিডিয়ো পোস্ট করেছিল আবদুল নামের ওই ব্যাক্তি। তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী, 295A এবং 298 ধারায় মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্তও শুরু হয়েছে পুলিশ। এই ধরনের কোনো ঘটনা পাকিস্তানের বুকে বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের রাষ্ট্র প্রধান।