করোনা ভাইরাস পৃথিবীতে নিয়ে এসেছে অতিমারী। বহু মানুষ হারিয়েছেন নিজেদের প্রিয়জনকে। করোনা বয়ে এনেছে অপূরণীয় ক্ষতি। এই করোনা সময়ে সারা বিশ্ব সাক্ষী হয়েছে অনেক বিরল ঘটনার। এমনই একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা আবারও সামনে এল। যা সত্যিই নজিরবিহীন।
নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মৃত্যুপথ যাত্রী স্বামীর স্পার্ম সংরক্ষণ করতে চেয়ে আবেদন করলেন তার স্ত্রী। ভবিষ্যতে নিজের সন্তানের মধ্যেই স্বামীকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়ে। জেনে নিন ঠিক কি হয়েছে। স্বামী করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন মাস কয়েক আগেই। কোভিডের করাল গ্রাসে একাধিক অঙ্গ বিকল হয়েছে ৩২ বছরের ওই যুবকের তাকে নিয়ে রীতিমত চলছে যমে মানুষে টানাটানি। সংকটজনক অবস্থায় ওই যুবক রয়েছেন লাইফ সাপোর্টে। তবু স্বামীর প্রতি ভালোবাসা এতটাই যে, তাঁরই সন্তানের মা হতে চেয়েছেন তার স্ত্রী। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যেই বাঁচিয়ে রাখতে চান নিজের ভালোবাসার মানুষটিকে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তিপক্ষ জানায় এই ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ ছাড়া কিছু করা সম্ভব নয়।
স্ত্রীর এমন আবেদনে সারা দিয়ে এই মর্মে গুজরাত হাইকোর্ট ভদোদরার একটি বেসরকারি হাসপাতাল কে অনুমতি দেয় স্পার্ম সংগ্রহ করার । অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজির (Assisted Reproductive Technology), ART বা আইভিএফ (IVF) -এর মাধ্যমে নিজের মৃত্যুপথ যাত্রী স্বামীর স্পার্ম নিয়ে সন্তান ধারণের জন্য এই আবেদন করেন মহিলা।
জানা গিয়েছে, মাত্র আট মাস বিয়ে করেছিলেন ওই দম্পতি। গত বছরের অক্টোবর মাসে তাঁদের বিয়ে হয়। কিন্তু করোনার কারণে খুব বেশিদিন তাদের সুখী দাম্পত্য বজায় থাকে না। মাত্র ৩২ বছর বয়সী ওই যুবক আক্রান্ত হয় করোনা ভাইরাসে৷ ফুসফুসে জটিল সংক্রমণে অবস্থা এতটাই সংকটজনক হয়ে দাঁড়ায় যে ওই যুবক কে আস্তে আস্তে লাইফ সাপোর্টে বাঁচিয়ে রাখতে হচ্ছে। এখন আর কাজ করছে না বেশিরভাগ অঙ্গ।
এক্সটাকরেলপোরাল মেমব্রেন অক্সিজেনেশনের পদ্ধতি ব্যাবহার করে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে তাঁকে। এরপরেই তার স্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন স্বামীর বীর্য সংরক্ষণ করে রাখার। কিন্তু স্বামীর অনুমতি ব্যতীত তা আইনত সম্ভব হয়না। তাই আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। জানান তার স্বামীর জীবনকাল খুব সীমিত। তার এমন মানবিক আবেদনে সারা দেয় গুজরাট হাইকোর্ট। পাশে দাড়িয়েছে তরুণীর শ্বশুরবাড়িও।