আশ্চর্যের দেশ ভারতবর্ষ। বহু লোকগাথা , কল্পনা ও বাস্তবের মিশেল। প্রাচীন কাল থেকেই এই দেশে রয়েছে এমন অনেক আশ্চর্য যার মেলেনি সদুত্তর। তেমনই এক আশ্চর্য এই শিব মন্দির। যেখানে দিনে তিনবার রং বদলায় এই মন্দিরের শিবলিঙ্গ। ভারতের বহু মন্দির কে ঘিরেই রয়েছে নানা ধরনের রহস্যময় গল্প তেমনই এক রহস্যকেন্দ্রিক মন্দির হল রাজস্থানের অচলেশ্বর মহাদেব মন্দির। এই শিব মন্দিরের যে শিবলিঙ্গ পূজিত হয় সেই শিবলিঙ্গ নাকি দিনের নানা সময়ে বিভিন্ন রঙে রঙিন হয়ে ওঠে৷
রাজস্থানের সিরোহী জেলায় অচলগড় কেল্লার বাইরে অবস্থিত এই শিব মন্দির। কথিত রয়েছে , মহাদেবের এই মন্দির গড়ে তোলা হয় শিব সম্ভুর একটি পায়ের ছাপকে কেন্দ্র করে। আনুমানিক নবম শতকে এই মন্দিরের। চার টন ওজনের একটি পঞ্চধাতুর তৈরী নন্দীর মূর্তি রয়েছে এই মন্দিরে। মহাদেব সঙ্গী নন্দীর এই মূর্তিই এই মন্দিরের দ্বার রক্ষক। কথিত রয়েছে প্রাচীন কালে কোনও এক মুসলিম শাসক আক্রমণ করে এই মন্দির ভাঙতে চেয়েছিল৷ তখন নাকি নন্দীর এই মুখ থেকে বেরিয়ে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি। মৌমাছির আক্রমণে পিছু হটে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় আক্রমণকারীরা।
এই শিবলিঙ্গ সম্পর্কে আরও একটি বিখ্যাত কথক প্রচলিত রয়েছে যে এই শিবলিঙ্গের আজ অবধি কোনও শেষ পাওয়া যায় নি। স্থানীয় লোকেরা বলছেন যে বহু বছর পূর্বে নাকি এই শিবলিঙ্গটি রঙ কেন পরিবর্তন করে তা দেখার জন্য আর এর শেষ দেখার জন্য শিবলিঙ্গের পাদদেশ খনন করা হয়েছিল। তখনই দেখা গিয়েছিল যে এই শিবলিঙ্গের কোনও শেষ নাকি নেই। বহুদূর খনন শেষেও এই শিবলিঙ্গ শেষ পাওয়া যায়নি। সেই থেকে এই শিবলিঙ্গের নাম আরও বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
শিব মন্দির যে অঞ্চলে সেই অঞ্চলটি চাম্বলের জলাশয়ের জন্যও বিখ্যাত। চম্বলে এক সময়ে বিদ্রোহী ও দস্যুদের শাসন ছিল। চম্বলের এই জায়গাতেই এক যুগে অচলেশ্বর মহাদেবের মন্দির স্থাপিত হয়েছিল। আর এই শিব মন্দিরের সব থেকে বড় বৈশিষ্ট্য হ’ল এই যে এখানে অবস্থিত শিবলিঙ্গ দিনে তিনবার নিজের রঙ পরিবর্তন করে। শিবলিঙ্গের রঙ সকালে লাল থাকে, তার পরে বিকালে ধারণ করে জাফরান রঙ এবং রাতে এই শিবলিঙ্গ কালো হয়।