পৃথিবীতে এমন অনেক রহস্যই আছে যার কোনও সেই ভাবে ব্যাখ্যা নেই। তেমনই এক জায়গা বারমুডা ট্রায়াঙ্গল। আমেরিকার এক জায়গা ফ্লোরিডা, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এর কাছে আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর তিনটি স্থলভাগ মিলে তৈরি করেছে এক ত্রিভুজ। এই ত্রিভুজ এমনই এক গোলকধাঁধা যার রহস্য চিরকাল অবাক করেছে। জাহাজ কিংবা বিমান— এই ত্রিভুজ অঞ্চলে এক বার ঢুকলে তার খোঁজ মিলত না।
এই কাল্পনিক ত্রিভূজের মধ্যে দিয়ে পার করা বহু জাহাজ আর বিমান রহস্যজনক ভাবে উধাও হয়ে গিয়েছে এখন থেকে। কোনওটির ধ্বংসাবশেষ পরে পাওয়া গিয়েছে, কোনওটির আবার এখনও পর্যন্ত কোনও খোঁজ মেলেনি।
কিন্তু জানেন কি শুধু বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল নয় এমন ত্রিভুজাকার জায়গা বিশ্বে আরও দু’টি রয়েছে? এর মধ্যে একটি আবার রয়েছে ভারতেই? আরেকটি রয়েছে চিনের কাছে প্রশান্ত মহাসাগরে।
অবাক হলেন? হ্যা ঠিকই শুনেছেন। আটলান্টিক মহাসাগরের উপরের বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের মতো ভারতের ওড়িশাতেও রয়েছে এক রহস্যজনক ত্রিভূজ রয়েছে। একে ‘ভারতের বারমুডা ট্রায়াঙ্গল’ বলা হয়।
যেই তিনটি জায়গা ঘিরে এই ত্রিভুজ গঠিত হয়েছে সেগুলি হল ওড়িশার আমারদা এয়ারফিল্ড, ঝাড়খণ্ড রাজ্যের চাকুলিয়া এবং বাঁকুড়ার কাছে পিয়ারডোবায়। বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের মতো উধাও না হয়ে গেলেও এই ত্রিভুজের মধ্যে দিয়ে যেতে গিয়ে প্লেন দুর্ঘটনা ঘটেছে মোট ১৬ বার। এখনও অবধি মৃত্যু ঘটেছে সব মিলিয়ে ২৫ জনের। এতগুলো দুর্ঘটনা ঘটার পেছনে ঠিক কি কারো আছে তা আজও জানা যায়নি।
বর্তমানে পরিত্যক্ত আমারদা এয়ারফিল্ডটি তৈরি করা হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চলার সময়। সেই সময় প্রচুর যুদ্ধবিমান ওঠানামা করত এই এয়ারস্ট্রিপে। প্রথম বার ১৯৪৪ সালের ৪ মে দুটি যুদ্ধবিমানের ধাক্কা লাগে এই ‘ভারতের বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে’। মারা যায় ৪ জন। সেই থেকে শুরু হয় দুর্ঘটনা।
তিন দিন পর আবারও হয় দুর্ঘটনা। ১০ জনকে নিয়ে একটি বিমান ধ্বংস হয়ে যায়। সর্বশেষে সাম্প্রতিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ২০১৮ সালে। রহস্য তৈরি হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ, দুর্ঘটনায় পড়া বিমানগুলিতে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না এবং আবহাওয়াও একেবারে ভালো ছিল। কিন্তু কেন এই বিপর্যয়? মনে করা হয় কাছাকাছি ঝাড়খণ্ডের জাদুগোরায় একটি ইউরেনিয়াম খনি আছে। ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তার কারণে বিপর্যয় ঘটেছে এমন তত্ত্ব অনেকে তুলেছেন কিন্তু তা এখনও প্রমাণিত নয়।