দেশে করোনার কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন। মারণ ভাইরাসের কবলে পরে প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছেন বহু পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ব্যাক্তিটি। অনেক তুলনামূলক অল্প বয়সীও প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছেন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে। এমন অবস্থায় নিজেদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে দিশাহীন বহু পরিবার। এমন অবস্থায় সেই মৃত ব্যাক্তি যদি ব্যাঙ্ক বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন তাহলে সেই ঋণ- এর কি হবে? বিশেষত গৃহ ঋণ।
আজকের দিনে বেশিরভাগ মানুষই নিজের একটা মাথা গোঁজার আশ্রয় চায়। উপার্জনক্ষম বহু মানুষই গৃহঋণ এর সুবিধা নিতে চায় নিজের একটা বাড়ি বানানোর জন্য। মাসিক কিস্তিতে তারা নিজেদের প্রতিমাসের বেতন থেকে ঋণ শোধ করে। কিন্তু হঠাৎ করোনা মহামারী যেসব ঋণ গ্রহিতার প্রাণ কেড়ে নিল তাদের বাকি কিস্তি কিভাবে পরিশোধ হবে?
ব্যাংক কিভাবে তাদের দেওয়া ঋণের টাকা পুনরুদ্ধার করবে। তারা কি ঋণ ক্ষমা করে দেবে। আর যদি তা না করে তাহলে কিভাবে ব্যাঙ্ক নিজের টাকা ফেরত নেবে। এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর রইলো।
ব্যাংক লোন কখনো ক্ষমা করে না:
সামগ্রিক ভাবে কোনো পরিস্থিতিতেই ব্যাঙ্ক ঋণের পরিমাণ কমায় না বা ঋণ ক্ষমা করে না। ভারতে এমন কোনও আইন নেই যা ঋণ গ্রহীতার মৃত্যুর জন্য তার ঋণ কে ক্ষমা করে দেয়। সুতরাং, এইরকম কোনো ভুল ধারণা রাখা ঠিক হবে না। এই কথাটি সব ধরণের ব্যাংক , এবং সব ধরনের লোনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
পরিবারের সদস্যদের এই ক্ষেত্রে কী করা উচিত
এখন বড় প্রশ্ন হল ঋণগ্রহীতার মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের সদস্যদের কোন পথ অবলম্বন করা উচিত? ঋণ পরিশোধের বিষয়ে মৃত ব্যাক্তির যদি ব্যাংকের সাথে সুসম্পর্ক থাকে তবে পরিবারের লোক কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক পরিবারের অসহায়ত্ব বুঝতে পারে এবং ঋণ পরিশোধ করার জন্য কিছুটা সময় বেশি দেয়।
কীভাবে পরিশোধ করবেন
ঋণগ্রহীতার স্ত্রী যদি পৈতৃক সম্পত্তি থেকে কোনও ধরণের সুবিধা বা পেনশন পেয়ে থাকেন তবে তাহলে ঋণ শোধ করাই হবে প্রাথমিক বাধ্যবাধকতা। অনেক ক্ষেত্রে সম্পত্তি সন্তান এবং স্ত্রীর মধ্যে সমানভাবে বণ্টন করা থাকে , সেই ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক জানতে চাইবে ঋণ কে পরিশোধ করবে তা আপনাকে প্রশ্ন করবে। অনেক ক্ষেত্রে, ব্যাংক আপনাকে ঋণ পরিশোধের নানা বিকল্পও দিতে পারে। তবে, এই সবই কিছুটা নির্ভর করে ব্যাঙ্কের সাথে আপনার সম্পর্ক এবং লেনদেনের ইতিহাস কেমন তার উপর। যদি ঋণ গ্রহীতা আগেও ব্যাঙ্ক থেকে কোনো লোন নিয়ে ঠিক মত শোধ করে থাকেন, বা যদি তার গৃহ ঋণের খুব সামান্য অংশই বাকি থাকে তাহলে ব্যাঙ্ক বাকী ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে কিছু সুযোগ সুবিধা দিতে পারে।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি কিভাবে মিলবে
অনেক ক্ষেত্রে গৃহ ঋণের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি খুব জটিল হয়ে উঠতে পারে। তবে এর থেকে বেরিয়ে আসার উপায় রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন যে কোনো ব্যাক্তি যখন গৃহ ঋণ গ্রহণ করে , সে সম পরিমাণ জীবনবিমা সুবিধা পায়। একে টার্ম ইন্স্যুরেন্সও বলা হয়। এই ক্ষেত্রে, ঋণ গ্রহীতার মৃত্যু হলে, বীমা সংস্থার কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে ঋণ শোধ করা যেতে পারে।