Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
FEATURED ট্রেন্ডিং

হাত চিরে নিবেদন করা হয় রক্ত! এখানকার জঙ্গলের মধ্যে এই ভাবেই হয়ে আসছে মা দুর্গার পুজো

প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূর ঝাড়গ্রামের থেকে, জায়গার নাম বালিপাল গ্রাম যা বেলিয়াবেড়া থানার অন্তর্গত সেখানেই অবস্থিত মা কেঁদুয়াবুড়ির থান। চারপাশে সবুজ গাছপালার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মা কেঁদুয়াবুড়ির মন্দির। মাটির হাতি, ঘোড়া মন্দিরের গর্ভ কুণ্ডের চারপাশে দেখতে পাওয়া যায়। মা দুর্গাকে পুজো করে আসছেন এখানে গোপীবল্লভপুর ২ ব্লকের বালিপাল, বাঘাগ্যাড়া, রামচন্দ্রপুর, আসনবনি সহ আশেপাশের প্রায় ৩৫ টি গ্রামের মানুষেরা।

এমনকি, এই মন্দিরে এখনও হাত চিরে রক্ত বার করে পুজো করার প্রথা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান সময়েও এই এলাকায় গৃহস্থের বাড়িতে বা পুজো মণ্ডপ গুলিতে পুজো শুরুই হয় পুজোর আগে মা কেঁদুয়াবুড়িকে পুজো দিয়ে। ইতিহাসের বিভিন্ন জনশ্রুতির সাথে এই মন্দিরের নাম জড়িয়ে রয়েছে। ষোড়শ শতকে চিয়ারা পরগনার অধীনে ছিল গোপিবল্লভপুরের এই এলাকাটি। পুরীর ক্ষত্রিয় রাজকুমার বলিপালদেব রাজ্যচুত হয়ে আনুমানিক পাঁচশো বছর আগে ভাগ্যক্রমে এই এলাকায় এসে পৌঁছান।

তখন কেন্দ গাছে ভরা জঙ্গল এই রাজ্যে। তখন একটি নিমগাছের নীচেই বসে ক্ষুধার্ত রাজকুমার বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। ঠিক সেসময় এক উপজাতি কিশোরীর রূপ ধরে মা দূর্গা রাজকুমার বলিপালদেবকে কেঁদ ফল খেতে দেন এবং পরে স্বপ্নাদেশ দিয়ে নিজেই জানান যে , ওই নিম গাছের নিচে কুণ্ডে দেবী অধিষ্ঠিতা। তিনি রাজকুমারের কাছে পুজো চান। তবে দেবী বেশ কিছু শর্তও দেন যে, কোন মন্দিরে নয় তিনি পুজো চান উন্মুক্ত আকাশের নীচে। তিনি আরও বলেছিলেন , শুধু মাত্র নিম্নবর্নের বাগদিরাই পুজো করবেন। দেবীমার কৃপায় তারপর পরাক্রমী রাজা হন বলিপালদেব।

এরপর রাজার নাম থেকেই এই এলাকার নাম হয় বালিপাল। আর সেই সময় কেঁদ গাছের জঙ্গলে কাল থেকেই মা একই রকম ভাবে পূজিতা হয়ে আসছেন। এই মন্দিরে বিশেষ ভাবে মা কেঁদুয়া বুড়িকেও দুর্গা পূজার সময় পূজো করা হয়। এখনও আগের মতই প্রথা অনুযায়ী বাগদি সম্প্রদায়ের পৌরাণিক আচার বিধি মেনে পুজো করে চলেছেন বাগদি সম্প্রদায়ের মানুষেরা। এই মন্দিরে পূজা দিতে আসেন প্রায় ৩৫ টা গ্রামের মানুষেরা। তারা পুজো দিতে এসে নিজেদের মনের কথা মায়ের কাছে এসেই বলেন। কোনও শুভ কাজের আগে মায়ের পুজো দেন এখানকার স্থানীয়রা। এমনকি তাঁরা মায়ের কাছে মানসিকও করেন। প্রথা মেনেই এখানকার মানুষরা মায়ের থানে প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবার পুজো হয়। আর বালিপাল গ্রামবাসীবৃন্দ এভাবেই প্রায় ৬৮ বছর ধরে মা দুর্গার আচার বিধি মেনে পুজো করে চলেছেন।

Related posts

টাকা দিতে পারবেন না! স্ত্রীকে খুন করতে তার বদলে সুপারি কিলারকে যা অফার করল স্বামী, শুনলে শিউরে উঠবেন

News Desk

কমলালেবু খাওয়ার পর খোসা ফেলে দিচ্ছেন! জানেন কত কাজে লাগে কমলালেবুর খোসা

News Desk

৩০ লাখের পলিসি করবে বলে বিমা এজেন্টকে হোটেলে ডেকে পাঠালো! এরপরই চলে অত্যাচার

News Desk