তিন দিন আগে এমন একটি ঘটনা সামনে এসেছে, যা শুধু রাজ্যেই নয়, সারা দেশেই আলোচিত হচ্ছে। ভাদোদরার এক মহিলা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই নারী বলেন, বিয়ের সময় তার স্বামী একজন পুরুষ নয়, একজন নারী ছিলেন এবং তিনি বিষয়টি সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। মহিলার অভিযোগের পর অভিযুক্ত ডক্টর বিরাজ বর্ধনকে গ্রেফতার করেছে ভাদোদরা পুলিশ। তবে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো আসামিকে পুরুষ না নারী কি হিসেবে বিবেচনা করা উচিত? এছাড়াও, পুলিশ এখনও দ্বিধায় রয়েছে যে বিরাজকে কে প্রশ্ন করবে – মহিলা পুলিশ না পুরুষ পুলিশ?
জানা গিয়েছে স্বামীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছিলেন ভাদোদরার এক মহিলা। ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটের মাধ্যমে দিল্লির ডক্টর ভিরাজের সঙ্গে ওই মহিলার দেখা হয়। আসলে, ডাঃ বিরাজ বিয়ের আগে একজন মহিলা ছিলেন এবং অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুরুষ হয়েছিলেন। অভিযোগকারিনীর কাছ থেকে বিষয়টি লুকিয়ে রেখেছিলেন ডাক্তার বিরাজ। এ ঘটনায় অভিযোগ মেলার পর পুলিশ ডক্টর বিরাজকে গ্রেপ্তার করেছে।
ভদোদরা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করার পর ডাক্তার বিরাজের বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। তার লিঙ্গ পরীক্ষায় জানা গেছে যে সে একজন মেয়ে, ছেলে নয়। এ ছাড়া লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য তার যে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল তা ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গেছে। তার বর্তমান পুরুষাঙ্গ উটের চামড়া থেকে তৈরি বলেও জানা গেছে। তবে তাতে কোনো লাভ হচ্ছে না। বিরাজকে তখনও নারীর মতো বসে প্রস্রাব করতে হয়।
পুলিশ তদন্তে জানা গেছে যে ডাঃ বিরাজ জন্মসূত্রে একজন মেয়ে। কলেজে পড়ার সময় তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি একজন মহিলা নন, একজন পুরুষ হতে চান। এরপর তিনি নারী থেকে পুরুষে পরিবর্তিত হতে হরমোন ইনজেকশন নিতে শুরু করেন। হরমোন ইনজেকশন নেওয়ার পর তার স্তন অপসারণ করা হয়েছিল। বি.এসসি শেষ করার পর বিরাজ এমবিবিএস পড়তে রাশিয়া যান। আসলে তার নাম ছিল বিজয়তা। পরে তিনি তার নাম পরিবর্তন করে বিরাজ রাখেন এবং অন্যান্য নথিতেও তার নাম পরিবর্তন করেন। এটাও বলা হয় যে তিনি একটি মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন কিন্তু এক বছরের মধ্যে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়।
এরপরে ডক্টর বিরাজ ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইটের মাধ্যমে ভাদোদরার এই মহিলাকে বিয়ে করেন। তবে এ সময় বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করা থেকে দূরে থাকেন তিনি। এর পাশাপাশি রাশিয়ায় দুর্ঘটনার কথা বলে পুরুষাঙ্গ ছোট হওয়ার অজুহাত দেখাতেন। পরে তিনি কলকাতায় গিয়ে লিঙ্গ পরিবর্তনের অপারেশন করান।
একজন পুলিশ অফিসার ইংরেজি দৈনিক টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেছেন, “বর্ধন নিজেকে একজন পুরুষ বলে দাবি করেছিলেন, তিনি লিঙ্গ পরিবর্তনের অপারেশনও করেছিলেন। তবে জৈবিকভাবে তিনি একজন নারী। এখন সমস্যা হল অভিযুক্ত মহিলা হলে তাঁকে মহিলা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে৷ যেখানে পুরুষের ক্ষেত্রে পুরুষ পুলিশ তদন্ত করে। এমতাবস্থায় আমরা কী করব তা নিয়েও দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছি?