কেরালার পুলিশ সদস্যদের নিজেদের এবং তাদের থানাকে রক্ষা করতে সাপের উপর নির্ভর করতে হয়। শুনে ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না তো, কিন্তু এটি সম্পূর্ণ সত্য। আমরা যে থানার কথা বলছি, তাতে সর্বত্রই সাপ দেখা যায়। এটি কেরালার সেই একই এলাকা, যেখানে প্রায় দুই সপ্তাহ আগে একটি চিতাবাঘ এক আদিবাসীকে আক্রমণ করেছিল, তারপর সে সেই বন্য প্রাণীটিকে কুড়ালের এক আঘাতে হত্যা করেছিল। থানায় সাপ মোতায়েনের ধারণা স্থানীয় এক ব্যক্তি পুলিশ সদস্যদের দিয়েছিলেন, যিনি ইতিমধ্যে একই ব্যাবস্থা গ্রহণ করছেন।
বানরের হাত থেকে থানা পাহারা দিচ্ছে ‘সাপ’
পুরো সমাজকে রক্ষা করার দায়িত্ব পুলিশের। কিন্তু, যদি শুধুমাত্র পুলিশ সদস্যদের সুরক্ষার প্রয়োজন হয়, তাহলে কে সাহায্য করতে পারে। কেরালার ইদুক্কিতে, বর্তমানে একটি থানার নিরাপত্তায় ‘সাপ’ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ইদুক্কির একটি পাহাড়ি স্টেশন যেটি ঘন জঙ্গলে ঘেরা এবং এখানেই এই ‘সাপ’গুলি পুলিশ এবং থানাকে নিরাপত্তা দেওয়ার বিকল্প হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। আসলে জঙ্গল হওয়ায় কুম্বুমেট্টু থানায় কর্মরত পুলিশকর্মীরা বানরের আতঙ্কে অস্থির এবং বানরদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তারা ‘সাপ’ গুলিকে মোতায়েন করেছেন।
এই থানাটি কেরালা-তামিলনাড়ু সীমান্তের কাছে অবস্থিত। কিন্তু, ভাবছেন নিশ্চয়ই যে বানরের হাত থেকে বাঁচতে ভয়ংকর সাপের সাথে কিভাবে সহাবস্থান করছে থানার কর্মীরা। আসলে মোতায়েন করা এই সাপগুলি সত্যি কারের সাপ নয়। এগুলো চীনে তৈরি আসল রাবারের সাপ। এতদিন বনে বানররা থানায় হট্টগোল করে সহজেই পালিয়ে যেত, কিন্তু সাপ মোতায়েনের এই কৌশল কাজ করেছে। এই কৌশলে পুলিশ সদস্যরা বেশ সন্তুষ্ট।
থানায় যত্রতত্র সাপ ঝুলছে
পুলিশ কর্মীরা তাদের সুবিধামত জানালা, লোহার গ্রিল এবং থানা ভবনের যেখানে পারছেন বা গাছে ঝুলিয়ে রাখছেন এই রাবার সাপ। বানররাও তাদের আসল মনে করে আক্রমণ করার সাহস করছে না।
বানরের আতঙ্ক থেকে এখন থানা নিরাপদ
কুম্বুমেট্টু থানা ইদুক্কির নেদুমকন্দমে অবস্থিত। পিকে লালভাই বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছিল যে প্রচুর বানর এসে সমস্যা সৃষ্টি করে, যদি সেখানে রাবার সাপ বেঁধে রাখা হয়, তারা কখনই আসবে না। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর থানায় আর কোনো বিপদ নেই। কেরালার পুলিশকর্মীদের এই কৌশল অন্যদের জন্যও খুব কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে। বিশেষ করে যেখানে বানরের উপদ্রব বেশি সেখানে এটি করলে তারা ভয়ে পালিয়ে যেতে পারে।
এই কৌশলটি বিপথগামী প্রাণীদের জন্যও ব্যবহার করা হচ্ছে
এখন প্রশ্ন হল, বানর তাড়ানোর জন্য রাবার সাপ ঝুলিয়ে রাখার বুদ্ধি পুলিশকর্মীরা পেল কোথা থেকে? প্রকৃতপক্ষে, যে লোকটি স্থানীয় এস্টেটের দেখাশোনা করেছিলেন তিনি এই পদ্ধতিটি পুলিশকে বলেছিলেন, যারা নিজেও বিপথগামী প্রাণীদের তাড়ানোর জন্য একই কাজ করে চলেছেন। তার পরীক্ষাটি সম্পূর্ণ সফল হয়েছিল এবং পুলিশ সদস্যরাও তার অভিজ্ঞতা থেকে অনেক সহায়তা পেয়েছেন।