আদালতে চাঞ্চল্যকর দাবী জানালেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী। শুক্রবার শুনানি চলাকালীন তাঁর আইনজীবীরা জামিনের কোনো আবেদনই করলেন না আদালতে। উল্টে তাদের অনুরোধ, অর্পিতাকে জেলে যেন রাখা হয় তবে প্রথম শ্রেণির কয়েদি হিসেবে। কিন্তু কেন বাইরে বেরোতে আগ্রহী নন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়?
শিক্ষক নিয়োগ ‘দুর্নীতি’তে অভিযোগের তীর প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দিকে। তাকে আর তার সাথে তার ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা যার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে ৫০ কোটির উপর টাকা তাদের শুক্রবার আদালতে তোলা হয়। ইডি হেফাজত আজ শেষ হয়ে যাওয়ায় দু’জনকেই আবারও পুনরায় ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার আর্জি জানায় ইডি। ইডির আবেদনের পর পার্থ চ্যাটার্জির আইনজীবিরা জামিনের আবেদন জানালেও অর্পিতার আইনজীবীরা জামিনে চাননি। ফলে জট পাকিয়ে উঠছে রহস্য। উঠেছে কেন জামিনের আবেদন জানাননি অর্পিতা? কেন জেলেই থাকতে ইচ্ছুক অর্পিতা? এই প্রশ্নের উত্তর না মিললেও আভাস অবশ্যই মিলেছে।
অর্পিতার আইনজীবী আদালতকে আরও দু’টি ব্যাপারে অবহিত করে। এক অর্পিতা মুখোপাধ্যায় অন্য ধরনের জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত তাই যেন মহামান্য আদালত তাকে প্রথম শ্রেণীর কয়েদি হিসেবে জেলে রাখে। দ্বিতীয়ত তার নিরাপত্তা যেন সুনিশ্চিত করা হয়। এমনকি তাকে প্রদেয় খাবার বা জল সবই যেন আগে একটু পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া হয় কেননা তার প্রাণ সংশয়ের ভয় রয়েছে। কিন্তু কেন? হেভি ওয়েট নেতাদের সাথে নাম জড়ানোই কি তার বিপদের কারণ। সুস্পষ্ট না হলেও ইঙ্গিত তাই বলে।
এদিকে অর্পিতাকে যে ভালোভাবে চিনতেন সেই কথা অস্বীকার করেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার অর্পিতা মুখোপাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি আধিকারিকরা। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই জেরা চলাকালীনই অর্পিতার সঙ্গে কোনো ধরণের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক অস্বীকার করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ইডি আধিকারিকেরা পার্থকে প্রশ্ন করে, “অর্পিতাকে কি চেনেন?” উত্তরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, “না সেইভাবে চিনি না।” ইডির উল্টে জিজ্ঞেস করে তাহলে কীভাবে চেনেন? পার্থ উত্তর দেয়, “বহু মানুষ নানা দরকার আসেন আমার কাছে। এই ভাবেই একে দেখেছি। নাকতলার দুর্গা পুজোতেও দেখেছি।” পার্থকে ইডি আধিকারিকেরা প্রশ্ন করে, “অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে, এই বিষয়ে জানেন?” পার্থর জবাব, “শুনেছি, তবে সেই টাকার সাথে আমার সম্পর্ক নেই।”
যেখানে সব যোগাযোগ রীতিমতন স্পষ্ট সেখানে এইভাবে চিনতে অস্বীকার করার কারণ কি? ক্রমেই ঘনাচ্ছে রহস্য।