আট বছর আগে মৃত স্বামীর লাশ পড়ে রয়েছে মর্গের ফ্রিজে। দেখতে গিয়ে আফসোস স্ত্রীর। পরে পরে শুকিয়ে যাচ্ছে মানুষটার দেহ। কিন্তু সৎকার হচ্ছে না। শুনে অবাক হচ্ছেন? যে নাম পরিচয় জানা ব্যাক্তির দেহ কিভাবে অপেক্ষা করছে হিমঘরে। তাও একটা দুটো বছর নয়, আট বছর। পড়ুন বিস্তারিত…
ঘটনাটির বাংলাদেশের। বাংলাদেশের সংবাদপত্র প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী মৃত খোকন নন্দী ওরফে খোকন চৌধুরী ওরফে খোকা চৌধুরী ওরফে রাজীব চৌধুরীর মৃত্যুর পর গত আট বছর ধরে মর্গের ফ্রিজে রয়েছে তার দেহ। কারণ তার দুই স্ত্রীর মধ্যের টানাপোড়েন। দুই স্ত্রী দুই ধর্মের হওয়ায় এই ঘটনার জল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। যতক্ষণ না মীমাংসা হচ্ছে দেহ ওভাবেই থাকছে। খোকনের দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম হাবিবা। এবং তার প্রথম স্ত্রীর নাম মিরা নন্দী।
প্রায় ৭০ বছর বয়সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৪ সালের ২৬ জুন মারা যান ওই ব্যাক্তি। সেই থেকে শুরু দুই স্ত্রীর তার দেহ ঘিরে টানাপোড়েন। তাঁর দুই স্ত্রী স্বামীর মৃতদেহ নিজ নিজ ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী সৎকার কিংবা দাফন করতে চান। এই টানাপোড়েন চলাকালীন প্রথমে তাঁর মৃতদেহ রাখা হয় বারডেমের হিমঘরে। কিন্তু ওই হিমঘরে দীর্ঘ সময়ের জন্য লাশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় বারডেম কর্তৃপক্ষ পুনরায় আদালতের কাছে আবেদন করে। শেষ অবধি আদালতের নির্দেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে খোকন বাবুর মৃতদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
তারপর আট বছর কেটে গেলেও আদালত এখন অবধি সিদ্ধান্ত দেয়নি খোকন কোন ধর্মের অনুসারী ছিলেন। আদালতের বিচার শেষে তার প্রথম পক্ষ অথবা দ্বিতীয় পক্ষ যেকোনো এক স্ত্রীর কাছে দেহটি হস্তান্তর করা হবে। প্রসঙ্গত বারডেম হাসপাতালের মর্গে দেহ রাখা বাবদ বিল হয়েছিল ২ লাখ ২৬ হাজার টাকা। শেষ অব্দি যেই স্ত্রীই দেহ সৎকারের অনুমতি পাক না কেন তাকে ওই বিল চুকাতে হবে। অপরদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের এক কর্মচারী জানান আট বছর এইভাবে ডিপ ফ্রিজে থেকে শুকিয়ে যাচ্ছে ব্যক্তির দেহ। যেভাবে শুনানি চলছে তাতে যে খুব দ্রুত বিষয়টি বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে তাও মনে হচ্ছে না।