দিন দুয়েক হলো দিদা গত হয়েছে। কিন্তু অবোধ নাতনি সেটা বুঝতে পারেনি। সে ভেবে বসলো হয়তো দিদা ঘুমাচ্ছে। ঘুম থেকে উঠে খেতে দেবে আমাকে। এই ভাবেই কেটে গেল ৪৮ ঘন্টার উপর। অবশেষে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে খোঁজ নিতে আসেন প্রতিবেশীরা। এসেই তারা বুঝতে পারেন কি হয়েছে। দেখেন মৃত বয়স্ক মহিলার পাশে বসে আছে তার বছর নয় এর নাতনি। কিন্তু দুদিন না খেয়ে থেকেও সে কেনই বা ডাকে নি কাউকে? আসলে রানী সকলের মতন নয়। বিশেষভাবে সক্ষম সে। কথা বলা হাঁটাচলা সবেতেই জড়তা আছে।
ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ফরেস্ট এরিয়ায়। ৭২ বছর বয়সী স্মৃতি ঝাঁ ঘুমের মধ্যে মারা যান। কিন্তু এই বিষয়ে কেউ টের পায়নি। দু দিন অতিবাহিত হলে গন্ধ ছড়ালে টের পান প্রতিবেশীরা। তবে যে বিষয়টি তাদের চোখে সবচেয়ে মর্মান্তিক লাগে তাহলে বিশেষভাবে সক্ষম নাতনি দিদার মরদেহের পাশে বসে আছে। এরপরই খবর দেওয়া হয় কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ স্টেশনে। পুলিশ এসে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে প্রতিবেশীরাই দায়িত্ব নিয়ে সৎকার করে বৃদ্ধার।
এক নাতনী ছাড়া ওই মহিলার কেউ ছিল না সেই ভাবে। স্বামী মারা গেছে বেশ অনেকদিন। ছেলে নিখোঁজ। তার মেয়ের এক মেয়ে রানী ছিল যে কিনা বিশেষভাবে সক্ষম। তাঁকে নিয়েই দিন কাটতো স্মৃতিদেবীর। প্রতিবেশীরা সাহায্য করতেন। অভাবের সংসারে বিশেষভাবে সক্ষম নাতনির চিকিৎসা করাতে পারেননি তিনি। দিদার ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল সেই রানী বুঝতে পারেনি যে দিদা আর নেই। মৃতদেহ থেকে গন্ধ ছড়ালেও দিদা উঠে পরবে এই ভেবে ঠায় তার পাশে বসেছিল রানী।
প্রতিবেশীরা এখন রানী কে নিয়ে চিন্তিত। এখন সে কোথায় থাকবে সেই নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। বর্তমানে এক প্রতিবেশী রাণীকে নিজের বাড়িতে রাখার ব্যবস্থা করেছেন। প্রতিবেশীরা মিলে প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন রানীর একটা ব্যবস্থা করতে। যাতে কোন হোমে রেখে তাকে চিকিৎসা করানো যায়।