সাম্প্রতিক সময়ে লিঙ্গ পরিবর্তন সম্পর্কিত অনেক (সেক্স চেঞ্জ সার্জারি নামেও পরিচিত) চাঞ্চল্যকর ঘটনা শোনা যায়। এটি সাধারণত সেই সমস্ত লোকেরা করে যারা এক লিঙ্গে (পুঃ লিঙ্গ বা স্ত্রী লিঙ্গ) জন্মগ্রহণ করে, তবে তাদের প্রকৃতি অন্য লিঙ্গের মতো। যেমন ছেলে হয়ে জন্ম অনেকের প্রকৃতি বা আচরণ মেয়ের মতন হয়। কিন্তু রূপান্তরকামী এক ব্রিটিশ মহিলার এই লিঙ্গ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত তার জীবনে মারাত্মক ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। কিভাবে? জানুন পুরো বিষয়টা..
ব্রিটেনের ৩১ বছর বয়সী সাইনাড ওয়াটসন একজন মেয়ে হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু ২০ বছর বয়সে পৌঁছানোর পর, তিনি বুঝতে পারেন তিনি নারী হিসাবে বাঁচতে ইচ্ছুক নয়। তিনি নিজেকে একজন পুরুষ হিসাবে ভাবতে শুরু করেছিলেন। এরপর তিনি নিজের হরমোন চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার করান নারী থেকে পুরুষ হওয়ার জন্য। কিন্তু ২৭ বছর বয়সে, তিনি টেস্টোস্টেরন (পুরুষ হরমোন) গ্রহণ বন্ধ করে দেন এবং আবার একজন মহিলা হিসাবে ফিরে আসার চেষ্টা শুরু করেন।
সিনেড ওয়াটসন বলেছেন যে ডাক্তাররা তাকে সঠিকভাবে পরামর্শ দেননি, যার কারণে তার সমস্যা হয়েছিল। তিনি বলেন তিনি যখন কিশোরী ছিলেন তখন তাকে যৌন হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল। এবং এই ঘটনার প্রভাব তার মাথায় এমন ভাবে পড়ে যে তিনি লিঙ্গ পরিবর্তন করেন। কিন্তু তার থেরাপিস্ট কখনোই তার এই মানসিক জটিলতার দিকে মন দেননি।
প্রায় ৪ বছর আগে, ২৭ বছর বয়সে এসে, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে তিনি ছেলে হয়ে একটি বড় ভুল করেছেন। ২৮ বছর বয়সে হরমোনাল ওষুধ নেওয়া বন্ধ করে তাই তিনি আবার নারীতে রূপান্তরিত হতে শুরু করেন।
সিনেডের জানিয়েছেন যে আসলে কিশোর বয়সে হওয়া যৌন নিপীড়ন তাকে মারাত্মক প্রভাবিত করেছিল সেই সময়। এমনকি তিনি গুগলের সার্চ করতেন আমি নারী হওয়া ঘৃণা করি, আমার কি করা উচিত? এর পরে, ২০১৪ সালে, তিনি স্যান্ডিফোর্ড গ্লাসগো জেন্ডার ক্লিনিকে পৌঁছেছিলেন, যেখানে তিনি একটি ছোটখাটো কাউন্সেলিং করেছিলেন। তিনি চিকিৎসার জন্য ১২ মাস অপেক্ষায় থাকেন।
সিনেড ওয়াটসন তার নাম পরিবর্তন করে শন রাখেন। সিনেড অনুভব করেছিলেন যে লিঙ্গ পরিবর্তন করলে তার সমস্ত সমস্যা দূর হয়ে যাবে এবং সে একজন পুরুষ হিসাবে বাঁচতে সক্ষম হবে। এরপর ২০১৫ সালে তার চিকিৎসা শুরু হয়। তিনি তার নাম পরিবর্তন করে শন রাখার পরে, তিনি নিজেকে একজন পুরুষ উপলব্ধি করেন পেরেছিলেন। সিনেড (Synad) এর mastectomy (স্তনের টিস্যু অপসারণের সার্জারি) ও করা হয়েছিল।
তাকে টেস্টোস্টেরন দেওয়া হয়েছিল। অতঃপর তার কণ্ঠে পুরুষালী ভাব চলে আসে এবং তার কণ্ঠ পুরুষের মত হয়ে যায়। ২৫ তম জন্মদিনের সময় তার পুরুষদের মতনই দাড়ি গোঁফ গজাতে শুরু করে যা দেখে তার বোন আন্দ্রেয়া ভয় পেয়ে যায়। টেস্টোস্টেরনের কারণে, তার আচরণে পরিবর্তন আসে। তার মেজাজ আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। এই সব কিছুর পর তিনি বুঝতে পারেন যে কারণে তিনি পুরুষ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেটি সঠিক ছিল না। তারপর তিনি টেস্টোস্টেরন গ্রহণ বন্ধ করে দেন। কিন্তু সিনেড তার থেরাপিস্ট ও চিকিৎসকদের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, কেন তাঁকে এমন করতে দেওয়া হলো? কেন কাউন্সিলিংয়ের পর তাকে লিঙ্গ পরিবর্তন করতে উৎসাহিত করা হলো? উত্তর খুঁজছেন সিনেড।