২৫ মে এক যুবক তার মা ও বোনকে নিয়ে মেহরাউলি থানায় পৌঁছান। তিনি অভিযোগ করেন, তার ছোট বোনকে অপহরণ করা হয়েছে। অভিযোগকারী পরিবার এও জানায়, অপহরণকারী তার বোনের ফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কল করে মুক্তিপণ দাবি করছে। অপহরণকারী একটি ছবিও পাঠায় যাতে মেয়েটির হাত বাঁধা এবং তার মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।
কিডন্যাপিং এর অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে, দিল্লি পুলিশ সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করে।।
যেভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ:
অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবীর ঘটনার তদন্ত করতে মেহরাউলি থানার এসএইচও পিসি যাদব প্রথমে নির্যাতিতার পরিবারের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে কোন সময়ে মেয়েটি বাড়ি থেকে বের হয়েছে? আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে যে ২৪শে মে বিকেল সোয়া চারটে নাগাদ মেয়েটি তার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। এর পরে, পুলিশ আশেপাশের অনেক সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখেও অন্য কোনও ক্লু পাওয়া যায়নি।
অপরদিকে অপহরণকারী মেয়েটির মোবাইল সুইচ অফ করে রাখলেও হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমে ক্রমাগত মুক্তিপণের টাকা দাবি করে আসছিল। পুলিশ তদন্তের পরিধি বাড়ালে ফোনের লোকেশন আগ্রার বলে নিশ্চিত করা হয়। ২৪ এবং ২৫ তারিখ রাত ১টা নাগাদ আগ্রার অবস্থানের বিষয়ে জানার সাথে সাথেই মেহরাউলি থানার পুলিশ আগ্রার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পুলিশ আগ্রার ঠিক সেই জায়গায় পৌঁছেছে যেখান থেকে সেই কলটি আসছিল।
সেই লোকেশনে অবস্থিত হোটেলগুলোতে তল্লাশির সময় আরেকটি ক্লু পায় দিল্লি পুলিশ।
দিল্লি পুলিশ ওই এলাকায় প্রায় ৫০টি হোটেলে তল্লাশি চালায়, সেই সময় একটি হোটেলে তদন্ত চালানোর সময় জানা যায় যে মেয়েটি ২৪ তারিখ রাতে ওই হোটেলে চেক ইন করেছিল। পুলিশ হোটেল রিসেপশনের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করলে পুলিশ দেখে যে মেয়েটি একাই হোটেলে এসেছিল। এরপর হোটেল কক্ষে পৌঁছে পুলিশ মেয়েটিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
জিজ্ঞাসাবাদে তরুণী যা জানালো তাতে পুলিশও অবাক:
জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি জানায়, তার শখ পূরণের জন্য অর্থের প্রবল প্রয়োজন ছিল। সে অনেক লোকের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিল যা তাকে শোধ করতে হতো, তাই সে নিজেই নিজের অপহরণের এই মিথ্যা গল্পটি ফেঁদে ছিল। সে একা একাই আগ্রা এসেছিল এবং তার ছবি তার পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি নিজেই ভয়েস কলিং অ্যাপের মাধ্যমে কণ্ঠ পরিবর্তন করে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এরপর ওই তরুণীকে নিয়ে পুলিশ দিল্লি পৌঁছে প্রতারণার মামলা দায়ের করে ওই তরুণীকে গ্রেপ্তার করে।