সকালবেলায় রাজ্য সড়কের ব্যস্ততার মাঝে চোখে পড়লো এক অদ্ভুত দৃশ্য। রাস্তার ঠিক মাঝখানে মাদুর পেতে বসে আছেন এক বৃদ্ধা। তাকে ঘিরে কৌতুহলী লোকের জমায়েত। একটু পরে ব্যস্ত সড়কে যানজট শুরু হলো। দাঁড়িয়ে গেল বাস অটো আর বাকি সব গাড়ি। কিন্তু কেন এই বৃদ্ধা রাস্তার মাঝখানে বসে? খবর গেল পুলিশে। পরিস্থিতি সামলাতে সে পুলিশ জানতে পারল স্বামীহারা বৃদ্ধার একমাত্র ছেলে আর বৌমা বৃদ্ধাকে দেখেনা। তাই কোন উপায় না পেয়ে রাস্তায় বসে আছেন তিনি। ওই বৃদ্ধার নাম পিয়ারী বেগম। বয়স ষাটোর্ধ।
গতকাল অর্থাৎ রবিবার সকালবেলায় তমলুক থানার চনশ্বরপুর হাইস্কুলের নিকটবর্তী তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কে ওই বৃদ্ধার এইভাবে রাস্তার মাঝে মাদুর পেতে বসে অবরোধ করায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। পরে পুলিশ এসে বৃদ্ধাকে ওঠানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বৃদ্ধা পুলিশকে জানায় আইন তার সুরাহা করুক। সে তার যথাসর্বস্ব ছেলে বৌমা কে লিখে দিয়েছে। কিন্তু এখন তাকে ঘার থেকে ঝেড়ে ফেলেছে ছেলে আর বৌমা। খেতেও দেয় না, অন্যের বাড়িতে থাকে সে। পুলিশ তাকে সমাধানের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় সে।
বৃদ্ধার ছেলের নাম পিয়ার মহম্মদ আর বৌমার নাম সুহানা বেগম। তাঁদের কারণে ৭ বছর আগে বাড়ি ছাড়তে হয় বৃদ্ধাকে। বৃদ্ধার অবস্থা দেখে তাঁকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেন প্রতিবেশী জিয়াউর রহমান। কিন্তু সেখানেও অশান্তি তাড়া করছিল বৃদ্ধাকে। মাকে বাড়িতে কেন রেখেছে সেই নিয়ে জিয়াউরের সাথে ঝামেলা করে বৃদ্ধার ছেলে আর বউমা। তার জন্য এইভাবে জিয়াউরকে হেনস্থা হতে হচ্ছে দেখে বৃদ্ধা ভীষণ মর্মাহত হয়ে যান।
বৃদ্ধ পিতা মাতার উপর ছেলে-বৌমার অবহেলা বা অত্যাচারের এই ঘটনা নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই কারণে রাস্তা অবরোধ করা খুব একটা শোনা গেছে বলে মনে হয় না। বৃদ্ধার অভিযোগ পেয়ে তার ছেলে বৌমার সাথে দেখা করতে পুলিশ সেই বাড়িতে যান। ছেলেকে দেখতে না পেলেও বৌমা সেখানে ছিল। সে দাবি করে যে শাশুড়িকে তারা বাড়িতেই রাখতে চেয়েছিল কিন্তু তিনি নিজের ইচ্ছায় থাকেনি। তাদের দুজনকে ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে থানায় আসতে বলেছেন পুলিশ। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।