প্রায়শই এমন কিছু ঘটনা শুনতে পাওয়া যায় যা শুনলে বিশ্বাস হয় না মানবিকতা কোথাও বেচেঁ আছে কিনা। আন্তর্জাতিক মাতৃ দিবসের প্রাক্কালে এমনই একটি খবর এলো বাংলাদেশের দিনাজপুর থেকে। ছেলে ব্যাঙ্কের উচ্চপদস্থ কর্মচারী। তাও সম্পত্তির লোভে ঘটালো নিন্দনীয় কুকর্ম। ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধের হাত ভাঙলো ছেলে। অভিযুক্ত ব্যাক্তির নাম রাজীব আলি ডন। নিগৃহীত মায়ের নাম রেজিয়া খাতুন। তিনি আগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করতেন। বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। ঘটনাটি ঘটেছে ঈদের দিন। গত বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
৮০ বছরের রেজিয়া খাতুনের স্বামী মারা গিয়েছে বেশ কয়েক বছর হলো। তার চার সন্তান। চারজনের মধ্যে দুইজন মেয়ে এবং দুইজন ছেলে। দুই মেয়েরই বিয়ে হয়ে গেছে। দুর্ভাগ্যবশতঃ বড় ছেলে মারা গেছে। ছোটো ছেলে রাজীব আলি ডন বাংলাদেশের ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক নীলফামারি জেলার সৈয়দপুর শাখার বেশ উঁচু পোস্টে আছে। গত বেশ কিছুদিন ধরে এই রাজীব আলি ডনই বাড়ি জমির একাংশ লিখে দেওয়ার জন্য মায়ের উপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন। কিন্তু মা বেঁকে বসায় তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে ছোট ছেলে ও ছেলের বউ। এইভাবে ৩ শতাংশ জমি নিজের নামে করিয়ে নিলেও সন্তুষ্ট হয়নি ছেলে। আরো সম্পত্তির লোভে বাড়ে অত্যাচারের মাত্রা।
ঈদের দিন চরমে ওঠে বৃদ্ধার উপর অত্যাচার। বাকি জমি এক্ষুনি লিখে দিতে হবে, এই দাবি নিয়ে চড়াও হয় ছোটো ছেলে আর ছেলের বউ।৮০ বছরের ওই মহিলা লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটেন। সেই লাঠি কেড়ে নিয়ে মারতে থাকে তারা। তারপরে লোহার রড দিয়েও মারে। অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে কাঁদতে থাকে বৃদ্ধা। ওই বাড়িতে থাকা বড় ছেলের সন্তান পড়শী এক মহিলাকে খবর দেয়। তারা এসে বৃদ্ধাকে কোনো রকমে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ছেলে-বৌমার মারধরে দুই হাত ভেঙে গিয়েছে বৃদ্ধার। আঘাত লেগেছে মাথায়ও। ইতিমধ্যে পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তি রাজীব আলি ডনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁকে হাজতবাসের নির্দেশ দিয়েছে বিচারক। কিন্তু মা কে কেউ এই ভাবে মারতে পারে! বিশ্বাসই হচ্ছে না বৃদ্ধার।