স্ত্রী ধন বলে কথা। তাই একটি কাপড়ে বেঁধে একটি এমন জায়গায় লুকিয়ে রেখেছিলেন যাতে সেটি সুরক্ষিত থাকে। এদিকে এই বিষয়ে বিন্দুবিসর্গ জানতেন না স্বামী। স্ত্রী বাড়ি ছিলেন না যেদিন সেইসময় অজান্তেই সেই গয়না সমেত চালের বস্তা ওজন দরে বিক্রি করে দেন তিনি। এদিকে বাড়ি ফিরে স্ত্রীর চক্ষু চড়কগাছ। চালের বস্তা গেল কোথায়? সবটা জানতে পেরে তো পায়ের তলার মাটি সরে যায়। তারপর…
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের (Birbhum) রামপুরহাট থানার হরিওকা গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে খবর, হরিওকা গ্রামের বসবাস করেন অপর্ণা মণ্ডল। একই গ্রামের ভেতরেই তাঁর শ্বশুরবাড়ি ও পিতৃগৃহ। অপর্ণা মণ্ডলের স্বামী কুমুদ রঞ্জন মণ্ডল বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। আগে তিনি পূর্ত দফতরে কাজ করতেন। তারা জানিয়েছেন তাদের গয়নাগাটি ব্যাঙ্কের লকারেই থাকে। কিন্তু একটা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য সেই গয়নাগুলোর লকার থেকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছিল। অনুষ্ঠান শেষে গয়না লকারে রাখতে কয়েকদিন দেরি হচ্ছিল কিছু কারণবশত। তাই চালের বস্তার মত একটি অভিনব স্থানে সেটি লুকিয়ে রাখেন অর্পনা দেবী। তার মনে হয়েছিল সেখানে সেটি সুরক্ষিত থাকবে। কিছু কারণবশত তিনি বড় ছেলের বাড়ি গেছিলেন কয়েকদিনের জন্য। তারপরে পিতার বাৎসরিক কাজে আবারো বাপের বাড়ি যান। ভেবেছিলেন সব মিটিয়ে ফিরে ব্যাংকের লকারে জমা দিয়ে আসবেন। কিন্তু বাড়ি ফিরে বৃহস্পতিবার একজন ভিক্ষুক কে ওই বস্তা থেকে চাল দিতে গিয়ে বাক্যহারা হয়ে যান অর্পনা দেবী। দেখেন সোনার গয়না যে চালের বস্তায় ছিল সেটি গায়েব।
দেখেই চিৎকার-চেঁচামেচি কান্নাকাটি করতে শুরু করেন তিনি। স্ত্রীর আর্তনাদে দৌড়ে আসেন স্বামী। স্ত্রীর যখন জানায় যে চালের বস্তায় ছিল সোনার গয়না তিনি বলেন ওজন দরে এক ফেরিওয়ালাকে বস্তা সমেত চাল বিক্রি করেছেন তিনি। খোঁজ পড়ে সেই ফেরিওয়ালার। ফেরিওয়ালা এসে জানান শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে এক আড়তদারের কাছে সেই চাল বস্তা সমেতই বিক্রি করে দিয়েছে সে। গয়নার খোঁজে সেই আড়তদারের বাড়িতে যান স্বামী-স্ত্রী। সেখানে গিয়ে দেখেন অক্ষত আছে তাদের সোনার গয়না। আড়তদার বরকত আলি তাদের গয়না সুরক্ষিতভাবে তাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়। গয়না ফিরে পেয়ে স্বস্তিতে স্বামী-স্ত্রী। সাথে সাথে আড়তদার বরকত আলির সততা ও মানবিকতায় মুগ্ধ সকলে।