বিহারের রাজধানী পাটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে এক ব্যক্তি তার মেয়ে ও ডিভোর্সী স্ত্রীকে গুলি করে হত্যা করেছে। এরপর তিনি নিজেকেও নিজে গুলি করেন। এ মামলার তদন্তে জানা যায়, অপরাধ যে ঘটিয়েছে সেই রাজীব নামক ব্যাক্তি দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর তার কন্যাকে (প্রথম স্ত্রী থেকে জন্ম নেওয়া) সঙ্গে রাখতে চাইলেও কন্যা তার সাথে ডিভোর্স হয়ে যাওয়া দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গেই বসবাস করছিলেন। এ নিয়ে তিনি চিন্তিত ছিলেন। সম্ভবত সে কারণেই পাটনার আনিসাবাদ এলাকার পুলিশ কলোনিতে তাদের খুন ও নিজে আত্মহত্যা করেন তিনি।
তথ্যমতে, রাজীব আইজির বাসায় ভাড়া থাকতেন। তদন্তে নেমে জানা যায় রাজীব কুমারের প্রথম স্ত্রী শশী প্রভা ইতিমধ্যেই মারা গেছেন। এর পর তিনি তার শ্যালিকা প্রিয়াঙ্কাকে বিয়ে করেন। রাজীবের দ্বিতীয় স্ত্রী প্রিয়াঙ্কাও কিছুদিন পর তাকে ডিভোর্স দেন। এ ছাড়া মেয়ে সংস্কৃতির সঙ্গে রাজীব কুমারের সম্পর্কও ভালো ছিল না। সংস্কৃতি ছিল তার প্রথম স্ত্রীর কন্যা। সংস্কৃতি তার বাবা রাজীবের সঙ্গে থাকতে চাননি।
রাজীবের ডিভোর্সি স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা সচিবালয়ে চাকরি করতেন। পাটনা পুলিশ পুরো বিষয়টি নিয়ে গভীর তদন্ত করছে। তদন্তের পর পুলিশের প্রাথমিক অনুমান পারিবারিক কলহ এবং মেয়েকে নিজের কাছে রাখার জন্য রাজীবের জেদই এই ঘটনার পেছনে দায়ী। পাটনার এসএসপি মানব জিত সিং জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজীব এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
রাজীবের প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর, তিনি তার শ্যালিকা প্রিয়াঙ্কা ভারতীকে বিয়ে করেছিলেন, কিন্তু তার সাথে তার সম্পর্ক ভালো ছিল না। রাজীবের কন্যা সংস্কৃতি ভারতী ছিলেন তার প্রথম স্ত্রীর কন্যা। কিছুদিন আগে রাজীবের সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যায় প্রিয়াঙ্কা ভারতীর। আনিসাবাদের পুলিশ কলোনীতে একটি ভাড়া বাসায় মায়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করে। রাজীবের মেয়ে সংস্কৃতি প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে তার দিদার বাড়িতেই থাকতেন।
বাবার সঙ্গেও সংস্কৃতির সম্পর্ক ভালো ছিল না। তাই সে তার সাথে থাকতে চায়নি। রাজীব তার পারিবারিক জীবন এবং তার মেয়ে নিজের থেকে দূরে থাকা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। তদন্তে সামনে এসেছে, প্রিয়াঙ্কা ৩ দিন আগে তার মা এবং সংস্কৃতির সাথে একটি বিয়েতে যোগ দিতে বেগুসরাই গিয়েছিলেন এবং বৃহস্পতিবার পাটনায় ফিরে আসেন। বৃহস্পতিবার প্রিয়াঙ্কা ও সংস্কৃতি পাটনায় ফিরে আসছে বলে রাজীব খবর পায়। সে ইতিমধ্যেই দুজনকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল। একটি লোডেড পিস্তল জোগাড় করে সে ওই বাড়ির বাইরে অপেক্ষা করছিল।
পুলিশের প্রাপ্ত সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, প্রিয়াঙ্কা, তার মা ও সংস্কৃতি বাড়ির গেটের কাছে পৌঁছতেই রাজীব তাদের ওপর হামলা চালায়। প্রথমে মেয়ে সংস্কৃতি ও পরে প্রিয়াঙ্কাকে গুলি করে। এরপর মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি নিজেও। পুলিশ এই বিষয়টিও তদন্ত করছে যে রাজীবের কাছে পিস্তল ও গুলি কোথা থেকে এল, যেখান থেকে সে এই গোটা ঘটনা ঘটিয়েছে?