Dainik Sangbad – দৈনিক সংবাদ
Image default
FEATURED ট্রেন্ডিং

‘চাকরিওয়ালা কাউকে বিয়ে করো’, স্ত্রীকে লিখে মর্মান্তিক কান্ড ঘটালো বি.টেক পাশ বেকার স্বামী

“আমি চলে যাচ্ছি। তুমি ভালো থেকো। চাকরিওয়ালা অন্য কাউকে বিয়ে করো।” হোয়াটসঅ্যাপে স্ত্রীর কাছে আসা এই বার্তাটি বাকি সব দিনের তার স্বামীর কথা মতোই একই রকম ঠেকেছিল। এই বার্তার কিছুক্ষণ পর দ্বিতীয় যে খবরটি আসে, তা কেড়ে নেয় এক বিবাহিত নারীর জীবনের সব কিছুই প্রায়। শুধু তাই নয় দুটি পরিবারের আনন্দও এক নিমিষে নিভে গেল।

ঘটনাটা কি? সতীশ বিঝাড়ে নামক এক ব্যক্তির সাথে ২০২০ সালে তিমার্নি সামোতা তিলওয়ারির বিয়ে হয়েছিল। সতীশ বিঝাদে মূলত হারদা জেলার ছিন্দওয়াড়ার বাসিন্দা। যদিও তার স্ত্রী তিমার্নি সামোতা তিলওয়ারি বন বিভাগে বনরক্ষী হিসেবে কর্মরত। সেই সময় ওই যুবক সতীশ বিঝাড়ে বি.টেক পাঠরত ছিল। কিন্তু বি.টেক পাশ হয়ে গেলে তিনি চাকরি পান নি এবং বেকারত্বের কবলে পড়েন। এ নিয়ে বাড়িতে প্রায়ই ঝগড়া হতো বলে জানা গেছে। বিয়ের পর থেকেই এই ঝগড়া শুরু হয়। যা প্রায়ই দুই পরিবারের বড়রা একসঙ্গে বসে সমাধান করে দিতেন।

স্ত্রীর সঙ্গে ঘন ঘন ঝগড়ার কারণে সতীশ বিঝাড়ে নিজেও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। শুরুর দিকে ঝগড়াঝাঁটি হলে পরিবারের সদস্যদের কাছে সেই কথা জানাতেন তিনি। পরে মনে করতেন রোজ রোজ সকলকে বিরক্ত করা হচ্ছে এবং যা হচ্ছে সেটা তার দুর্ভাগ্য। তাই ঝগড়াঝাঁটি হলেও কাউকে বলতেন না। যদিও ততক্ষণে দম্পতির মধ্যে বিবাদ এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে পরিস্থিতি বিচ্ছেদের পর্যায়ে চলে যায়। বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আদালতে আবেদনও করা হয়।

এরপরেই একদিন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন স্বামী সতীশ। পুলিশ জানায়, ২০২২ সালের ১৫ এপ্রিল স্ত্রী সামোতা রাহাতগাঁও এলাকায় ডিউটিতে গিয়েছিলেন। সে সময় স্বামী সতীশ বিঝাদে হার্দায় তাঁর নিজের বাড়িতেই ছিলেন। শনিবার মধ্যরাতে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে স্ত্রীর মোবাইলে কিছু মেসেজ পাঠান সতীশ। রোববার সকালে ঘুম থেকে উঠেই স্ত্রী এসব মেসেজ পড়েন। স্বামীর কাছ থেকে প্রাপ্ত মেসেজগুলোর উত্তরও দিয়েছেন মহিলা। কিন্তু ওপাশ থেকে (স্বামী সতীশ এর) কোনো জবাব আসেনি। তাই স্বামীকে মোবাইলে কলও করেন ওই নারী। ওপার থেকে কেউ ফোনও ধরেনি। এরপরই হরদায় স্বামীর বাড়িতে পৌঁছান ওই নারী। অনেকক্ষণ দরজা ধাক্কালে কেউ খোলেনি।

তাই অপ্রীতিকর কিছুর আশঙ্কায় ওই মহিলা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে দেয়। ঘরের মধ্যে মহিলার স্বামী সতীশের ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখে সকলে বাক্যহারা হয়ে যায়। সতীশের মৃতদেহ ঘরে ঝুলছিল। স্থানীয় থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, সতীশ নামে ৩৫ বছর বয়সী এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ পাওয়া গিয়েছে। তার কাছে একটি দুই পৃষ্ঠার সুইসাইড নোটও পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল তদন্ত করে পুলিশ জানায়, তাদের প্রাথমিক অনুমান মধ্যরাতে সতীশ আত্মহত্যা করেছে।

সতীশ যে কয়টি মেসেজ তার স্ত্রীকে পাঠিয়েছিল এর মধ্যে একটি মেসেজ এমনও ছিল যে, “আমি চলে যাচ্ছি। তুমি ভালো থেকো। চাকরি করে এমন অন্য কাউকে বিয়ে করো।” বর্তমানে মামলার তদন্তে নিয়োজিত পুলিশ সতীশ ও তার স্ত্রী উভয়ের মোবাইল ফোনই নিজেদের দখলে নিয়েছে। পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া সুইসাইড নোটটিও সিল করে হাতের লেখা পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, স্ত্রী সমোতা জানিয়েছেন, আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করার পরও তিনি স্বামীর সঙ্গেই থাকতেন। কিন্তু গত ৪ই জানুয়ারি স্বামী সতীশ আপত্তিকর ভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করেন সমোতার মোবাইল নম্বর। ঘটনার বিষয়ে হরদা থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন স্ত্রী। ওই ঘটনার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া মোবাইল নম্বরে অজানা লোকের কাছ থেকে আপত্তিকর কল পেতে শুরু করে সুমোতা। এই নিয়েও অশান্তি হয়েছিল।

Related posts

উঠতে হবে না গাছে। ডাব নারকেল পেড়ে আনবে রোবট! এসে গেল কোকো বট

News Desk

দাদু হতে চলেছেন অনিল কাপুর? কন্যা সোনম কাপুরের ইনস্টাগ্রাম পোস্ট ঘিরে হইচই

News Desk

এই বছর মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক নিয়ে অভিবাবকদের মতামত চাইলো রাজ্য

News Desk