রাজস্থানের বুন্দি জেলার তরখেদা গ্রামের থেকে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে এক যুবক খুন হওয়ার নেপথ্যের কারণ হিসেবে অদ্ভুত তথ্য প্রকাশ করেছে ডাবলানা থানা পুলিশ। ওই যুবককে হত্যার অভিযোগে তার দুই খুড়তুতো ভাই ও তার জামাইবাবু কে আটক করেছে পুলিশ। জানা গেছে নিহতের বাবাকে শিক্ষা দিতেই খুনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ধৃতদের অভিযোগ নিহতের বাবা তন্ত্র মন্ত্র এবং কালা জাদুতে পারদর্শী। তার কর্মকান্ডে তার ভাইয়ের পরিবার এবং আরো অনেক আত্মীয় স্বজনের জীবন নাকি বিষিয়ে উঠেছিল। তাই তারা তাকে উচিত শিক্ষা দিতে তার ছেলেকে হত্যা করেছে। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার জয় যাদব জানিয়েছেন যে সঞ্জয় বৈরওয়া (বয়স ৪০ বছর) গত ৮ই এপ্রিল রাতে তার কা খেদা গ্রামে তার খামার পাহারা দিতে গিয়েছিলেন। এরপর ৯ এপ্রিল সকালে মাঠে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। যখন তাঁর স্ত্রী সোভাগ বাই সকালে তাঁকে দেখতে পান দেখেন যে মৃত সঞ্জয় বৈরওয়া খাটের উপর শুয়ে আছেন। তার মাথায়, গলায় ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্তে নামে।
প্রযুক্তিগত গবেষণা থেকে অভিযুক্ত ধরা পড়ে।
সাইবার টিমের সহায়তায় ও আশেপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। প্রযুক্তিগত গবেষণা এবং ইনফরমার সিস্টেমের সাহায্যে, তর কা খেদা গ্রামের বাসিন্দা সন্দেহভাজন প্রহ্লাদ বৈরওয়া কে আটক করা হয়েছিল। তাকে কঠোরভাবে জেরা করলে তিনি পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ভেঙে পড়েন। এবং নিজের অপরাধ কবুল করে নেন। তিনি জানিয়েছেন গত ৮ই এপ্রিল রাতে, তিনি তার নিজের ভাই দেবকরণ এবং নিহতের জামাইবাবু শঙ্করলালের সাথে মিলে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তদন্তের সময় জানা যায় যে অভিযুক্তরা তাদের কাকা ভাগরামের তন্ত্র মন্ত্র এবং যাদুবিদ্যার কথা বিশ্বাস করতেন। তাদের বিশ্বাস ছিল কাকা যাদুবিদ্যা করে তাদের জীবনে নানা অশান্তি সৃষ্টি করছে। তাই তাকে শিক্ষা দিতে অভিযুক্তরা জাজাওয়ার মাতাজি মন্দিরে জড়ো হয় এবং ভাগরামের ছেলে সঞ্জয়কে খামারে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার রাতে সঞ্জয় খামারে খাটের ওপর ঘুমিয়ে ছিলেন। সেখানেই তাকে তারা হত্যা করে।
পুলিশি জেরায় জানা গেছে নিহত সঞ্জয়ের বাবা ভাগরাম অভিযুক্ত প্রহ্লাদকে নিজের তন্ত্র মন্ত্র দিয়ে হয়রানি করতেন। প্রহ্লাদ তাকে তাদের সাথে এসব না করতে বললে তার কাকা মদ ও মাংস দাবি করতেন। টাকাও চাইতেন তান্ত্রিক কাকা। ধৃত প্রহ্লাদ আরো বলেন তাদের কাকার কারণে ভাই দেবকরণের প্রথম স্ত্রীকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। এমনকি তার বিশ্বাস এই কারণে ২০০৯ সালে তার ভাইয়ের বউ মারা যান। প্রহ্লাদের বড় ভাই চেতনও নাকি কাকার তান্ত্রিক বিদ্যার প্রভাবে পাগল হয়েছিলেন। প্রহ্লাদ জানিয়েছে কাকা ভাগরাম পরিবারের সবাইকে কষ্ট দিয়েছিল।
প্রহ্লাদের মাকেও সে জাদুবিদ্যার শিকার বানাতো। এমনকি শঙ্করলালের বাবার উপরও জাদুবিদ্যা করেছিলেন। শঙ্করলাল ওয়েল্ডিংয়ের দোকান চালান। কিন্তু ক্ষতি হয়ে দোকান বন্ধ করতে হয় তাকে। এতে বিরক্ত হয়ে তিনজনই ভাগরাম বৈরওয়াকে পাঠ শেখানোর জন্য তার ছেলে সঞ্জয় বৈরওয়াকে হত্যা করে।
পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করছে। অন্ধবিশ্বাস থেকেই এই হত্যাকাণ্ড পুলিশের প্রাথমিক অনুমান এটাই।