এক মায়ের তার নিজের ছেলের চোখে মুখে লাল লঙ্কার গুঁড়ো ডলে দেওয়ার ভিডিও (Mother Rubbed Red Chilli Powder in Son’s Eyes) সোশ্যাল মিডিয়ায় আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানার (Telengana) নালগোন্ডা জেলায়। আসলে, এই মা তার ১৫ বছর বয়সী ছেলের গাঁজার নেশায় এতটাই তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন যে ছেলে নেশা করে বাড়ি ফিরলে তিনি প্রথমে তাকে একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখেন। তারপর ছেলের চোখে লাল লঙ্কার গুঁড়ো ঘষে মাখিয়ে দেন। তবে এই ভিডিও (Shocking Video) নিয়ে নেটিজেনদের মতামত বিভক্ত। বেশিরভাগ সোশ্যাল মিডিয়া ইউজার এই মহিলার নিজের ছেলে কে শিক্ষা দেবার পদ্ধতিকে ভুল বলেছেন। ছেলেকে সঠিক পথে আনতে তাকে শাসন করা উচিত কিন্তু চোখেমুখে লঙ্কার গুঁড়ো ঘষে দেওয়ার মতো নৃশংস অত্যাচার চালানোর কোনো যুক্তি হয় না।
তেলেঙ্গানার সংবাদ মাধ্যম সাক্ষীর (Sakshi) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি তেলঙ্গানার সূর্যপেট এলাকার। ওই মহিলার নাম রমানাম্মা (Ramanamma)। তিনি দিনমজুরি করেন। ১৫ বছর বয়সী ছেলে করোনা মহামারীর সময় স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেলে গাঁজার নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এই ভিডিওটি যখন করা হয়েছে তার আগের দিন দশেক সে বাড়ি ফেরেনি। এরপরে সে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরলে তার মা সহ্য করতে পারেনা।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে যুবককে একটি খুঁটির সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। দেখা যায় সে তার মায়ের সামনে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। তার সামনে দাঁড়ানো মহিলার হাতে রয়েছে লাল লঙ্কার গুঁড়া। সেটি তিনি ছেলের চোখে লাগানোর চেষ্টা করেন। কাঁদতে কাঁদতে ছেলে বারবার তাকে অনুরোধ করছে এটি না করতে। কিন্তু ভিডিও দেখে প্রতিত হচ্ছে মায়ের রাগ চরমে। সে তার মাদকাসক্ত ছেলেকে শিক্ষা দিতে বদ্ধপরিকর। এরপরই ভিডিওতে দেখা যায় যে মহিলা তার ছেলের চোখে লঙ্কার গুঁড়ো লাগাতে শুরু করেছেন। এর পর আরেক মহিলা এসে তার হাত ধরে ফেলে আর মা ছেলের চোখে এক মুঠো লঙ্কার গুঁড়ো ছুড়ে দেন। এরপর এই ছেলেটির যন্ত্রনায় কাকিয়ে ওঠে। প্রসঙ্গত ছেলেটির চোখের এই থেকে বড় ক্ষতি হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনার ভিডিও মাইক্রো-ব্লগিং সাইট টুইটারে @IndiaGender হ্যান্ডেলে শেয়ার করা হয়েছে। পোস্ট করার সময় ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘তেলেঙ্গানার একজন মা যখন জানতে পারলেন যে তার ছেলে গাঁজায় আসক্ত, তখন তিনি তার ছেলেকে একটি খুঁটির সঙ্গে বেঁধে তার চোখে লঙ্কার গুঁড়ো মাখিয়ে দেন।’ এর সঙ্গে লেখা আছে শিশু নির্যাতন। এতে সন্তানের উন্নতি হবে না। এমনটা করলে তার হৃদয়-মনে আঘাত লাগবে। অনেক সংবেদনশীল লোক মনে করে যে ছেলেটিকে নির্মমভাবে শাস্তি দেওয়া ঠিক এবং প্রয়োজনীয়।
অনেকেই এই পোস্টের নিচে ভিডিওটা নিয়ে নিজেদের মতামত কমেন্ট করে জানিয়েছে। প্রায় সবাই দোষারোপ করছে মহিলার ছেলেকে শিক্ষা দেওয়ার পথ কে। একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করে লিখেছেন, ‘কখনও কখনও কথা বলে কাজ হয় না। কিন্তু এইভাবে শাস্তি দেওয়া বাড়াবাড়ি। এতে ওই কিশোরের দৃষ্টিশক্তিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।’ একই সঙ্গে আরেক ব্যবহারকারী বলেন, ‘আমি সন্তানদের শাসন করতে মারধর করা সমর্থন করি, কিন্তু চোখে লঙ্কার গুঁড়া মাখিয়ে দেওয়া একেবারেই ভুল।’