পৃথিবী যতই এগিয়ে যাক, যুগ যতই আধুনিক হোক কুসংস্কার আজও মানুষকে ঘিরে রেখেছে। আর কিছু মানুষ জনসাধারণের মধ্যে কুসংস্কার এর সুযোগ নিয়ে ঘটিয়ে ফেলে মারাত্মক ধরনের অপরাধ। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের ভোপালের হবিবগঞ্জে অশুভ আত্মা শরীর থেকে তাড়ানোর নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে। জানা গেছে ১০ম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে শরীর থেকে অশুভ আত্মা তাড়ানোর নামে তাঁকে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ধর্ষণ করেছে ৩০ বছর বয়সী ফল বিক্রেতা।
এ ঘটনায় থানায় নির্যাতিতার পরিবারের তরফ থেকে একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ আধিকারিকদের মতে, নিহাল বেগ নামে এক ব্যক্তির দ্বারা দশম শ্রেণির এক নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ওই ছাত্রীর অভিযোগ, অভিযুক্ত নিহাল বেগ তার বাড়িতে এসেছিলেন। নিহাল বেগ নামক ব্যক্তি ওই ছাত্রের বাবা মাকে বুঝেয়েছিলেন যে তার ঐশ্বরিক ক্ষমতা এবং প্রার্থনা বাড়িতে সমৃদ্ধি আনবে এবং আর্থিক অনটন শেষ হবে।
পুলিশ কর্মকর্তারা আরো জানিয়েছেন নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবার ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের ব্যবসা ছিল। একই সঙ্গে মেয়েটির মা একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা। করোনা মহামারীর সময় লকডাউন চলাকালীন, নির্যাতিতার বাবার ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল, যার কারণে তিনি হতাশায় ভুগছিলেন। এ সময় মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা নিহাল বেগের সঙ্গে দেখা করেন। নিহাল বেগ পরিবারকে জানান, মেয়েটির শরীরে অশুভ আত্মার বাস আছে, যাকে সে তাড়িয়ে দিতে পারে। আর এই দুষ্টু আত্মার কারণেই তাদের পরিবারে সমস্যা এবং আর্থিক অনটন।
পুলিশ আরো জানিয়েছেন, অভিযুক্ত সপ্তাহে দুবার ওই ছাত্রীর বাড়িতে যেত এবং পরিবারের সকল সদস্যদের বুঝিয়ে দিত যে তার প্রার্থনা চলাকালীন তাকে মেয়েটিকে নিয়ে আলাদা কক্ষে থাকতে হবে। পরিবারের সদস্যদের বার করে দিয়ে কক্ষে তালা দিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটাতেন নিহাল বেগ।
নির্যাতিতা জানিয়েছেন ধর্ষণের ঘটনার পর নিহাল বেগ ছাত্রীটিকে হুমকি দিতেন যে কাউকে জানালে সে তার বাবা-মাকে প্রাণে মেরে ফেলবেন। বিষয়টি সামনে আসে যখন অভিযুক্ত নিহাল বেগ প্রায় ৬ মাস ধরে এই কাণ্ড ঘটানোর পর অবশেষে মেয়েটির পরিবারকে জানায় যে সে মেয়েটির ভিতর থেকে দুষ্ট আত্মা কেড়ে নিয়েছে এবং এখন তার আর এই বাড়িতে আসার দরকার নেই। অভিযুক্ত বাড়িতে আসা বন্ধ করার পর নির্যাতিতা তার বাবা-মাকে ধর্ষণের কথা জানায়।
নির্যাতিতার কথা শুনে তার বাবা-মা থানায় মামলা করেন। ভিকটিমের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ মামলা দায়ের করে অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।