কলকাতার পথে মারাত্মক দূর্ঘটনা। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল মাত্র ২৩ বছর বয়সী ঋষভ মণ্ডলের। মঙ্গলবার বৃষ্টির পরে জল জমে কলকাতার রাস্তায়। রাজভবনের সামনে হাঁটু সমান জলের মধ্যে হেঁটে যেতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে জলের মধ্যে পড়ে গিয়ে ছটফট করতে শুরু করে এক যুবক।
কিছুক্ষণের মধ্যেই নিস্তেজ হয়ে পরে সেই যুবক। পরনে আকাশি নীল রঙের শার্ট আর কাঁধে তখনও ঝুলছে ব্যাগ। এই ভাবেই জলে ভেসে থাকে যুবকের দেহ বেশ কিছুক্ষন। পুলিশ পরে এসে তার দেহ উদ্ধার করে। পকেট থেকে উদ্ধার করা হয় পরিচয়পত্র।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজভবনের সামনে এমনই মর্মান্তিক দৃশ্যের সাক্ষী হল শহর। বেঘোরে মৃত্যু হল ২৩ বছর বয়সী ঋষব মন্ডলের। কলকাতায়
হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়ামে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন ঋষভ।
মঙ্গলবার বিকালে ঘণ্টাখানেকের ভারি বৃষ্টিতে শহরের অনেক জায়গায় জল জমে যায়। রাজভবনের সামনেও প্রায় হাঁটু সমান জল জমে। জল জমার ফলে সেই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখান দিয়েই হেঁটে যাচ্ছিলেন ঋষভ। হেঁটে যাওয়ার সময়ই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে যায়। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জীবন হারায় সে।
পরে খবর পেয়ে পুলিশ অ্যাম্বুলেন্স এসে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যান পুলিশকর্মীরা। ময়নাতদন্তের পরেই মৃত্যুর আসল কারণ বোঝা যাবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিকে খবর পৌঁছতেই ফারাক্কায় শোকের ছায়া নেমে আসে। খবর পেয়ে শোকের ছায়া নেমে আসে কলকাতা থেকে প্রায় তিনশো কিলোমিটার দূরে ফরাক্কার এনটিপিসি নবারণ এলাকায়। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়েই ঋষব মন্ডলের মা ভেঙে পড়েন, মেঝেতে শুয়ে শোকে আর্তনাদ করতে থাকেন তিনি। ছেলের এহেন মৃত্যু এখনও অবধি মেনেই নিতে পারছেন না ঋষভের বাবা-মা। ঋষভের বাবা অভিযোগ করেছেন এই মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের প্রয়োজন। তিনি আরও জিজ্ঞেস করেন এত বড় ভুল কি করে হয় যে একটা শহরের রাস্তায় এই ভাবে ইলেক্ট্রিকের তার ছিঁড়ে পরে থাকে। ক্ষোভ জানান সরকারি দপ্তরের উপর। রাস্তায় লাইটের ইলেকট্রিক পোল, সেই পোলে খোলা তার, নাকি বৃষ্টির জল জমে পুরো জলেই বিদ্যুৎ, শহরে তখন রাজ্য সরকার ও CESC এর মধ্যে দায় নিয়ে ঠেলাঠেলির পালা।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করে ঋষভ হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়ামে চাকরি করত। অফিস শেষে সাড়ে সাতটার নাগাদ বাড়ি ফিরতেন ঋষভ। কিন্তু মঙ্গলবার এই মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হয়ে বাড়ি ফেরা হলো না তার। তাই সরকারী দপ্তর গাফিলতির তদন্ত চেয়ে দাবী জানিয়েছে ঋষভের বাবা, কার জন্যে প্রাণ হারাতে হল তাদের ছেলে কে, উত্তর খুঁজছে পরিবার।