ছোট্ট মেয়ের চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে মৃত্যু এই অভিযোগে চরম উত্তেজনা ছড়ালো রায়গঞ্জ-এ। শিশু মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজিত এবং ক্ষুদ্ধ পরিজনদের সঙ্গে পুলিশের ধ্বস্তাধস্তি পর্যন্ত বিষয় গড়ায়। শুক্রবার সকালবেলা রায়গঞ্জের ছটপড়ুয়া অঞ্চলের একটি বেসরকারি হাসপাতাল চত্বরে এই ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে চিকিৎসারত অবস্থায় ওই হাসপাতালে একটি আট বছরের মেয়ের মারা গেছে। বাচ্চাটি পরিবার অভিযোগ আনে হাসপাতাল তরফে পরিবারকে জানানো হয়েছিল যে তাঁদের মেয়ে ভালো আছে। অথচ তারপরে জানতে পারা যায়, মেয়ের জ্ঞান ফিরছে না। মেয়েকে সেখান থেকে রায়গঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান, ঘন্টা তিনেক আগেই প্রাণ হারিয়েছে বাচ্চা মেয়েটি।
মৃত মেয়েটির নাম অদিতি দাস। রায়গঞ্জের গৌরি গ্রাম পঞ্চায়েতের নরম কলোনিতে পরিবারের সাথে বাস করত সে। বয়স মাত্র ৮। অদিতির পরিবার জানিয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে ওই বেসরকারি হাসপাতালে অদিতির ঠোঁটের একটি অপারেশন হয়। পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার সকালে হাসপাতালে খোঁজ নিতে গেলে হাসপাতালের তরফে তাদের বলা হয়, তাঁদের মেয়ে নাকি সুস্থই আছে। কিন্তু কিছুক্ষণ যেতে না যেতেই তাদের বলা হয়, তাদের মেয়ে অপারেশনের পর থেকেই সংজ্ঞাহীন আছে। অপারেশনের পর থেকে নাকি মেয়ের নাকি জ্ঞানই আসছে না।
এরপরই শিশুটিকে রেফার করা হয় রায়গঞ্জ মেডিক্যালে। সেখানে তাঁকে নিয়ে যেতেই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে চিকিৎসকরা। শুধু তাই নয় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল থেকে জানানো হয় যে ৩ ঘণ্টা আগেই প্রাণ হারিয়েছে ওই শিশুটি। এই কথা শুনেই ফের কিশোরীর দেহ সমেত বেসরকারী ওই হসপিটালে গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে শিশুটির পরিবারের লোকজন।
কিভাবে একটি ঠোঁটের অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে কেউ মারা যায় প্রশ্ন পরিজনদের। এই মৃত্যু কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারেনা বলেই দাবী পরিবারের। চিকিৎসা এবং হাসপাতালের গাফিলতিতেই এমন ঘটনা বলে অভিযোগ তুলে সরব হয় মৃতার পরিবার। মেয়েটির বাবা সুব্রত দাসের অভিযোগ, ওই হাসপাতালে মেয়ের অস্ত্রোপচার করানোর ইচ্ছা ছিল না তাঁদের। বেশ কয়েকবার ওই শিশুর বাড়ির লোককে জোর করে বুঝিয়ে সুঝিয়ে অপারেশন করতে রাজি করানো হয়। সঠিক পরিকাঠামো , আর দক্ষ স্বাস্থ্য কর্মীর অভাব এই দুই অভিযোগে সরব শিশুটির পরিবারের লোকজন। এই ঘটনায় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।