এ যেন বিশ্বাস করা কঠিন! এও কি সম্ভব যে খোদ নিজের বাবা ই দুই ছেলেকে পরপর ছুঁড়ে ফেলে দিলেন বাড়ির কুয়োয়। ভয়াবহ এই ঘটনাটি ঘটেছে নিউ জলপাইগুড়ি থানার অন্তর্গত ফুলবাড়ি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাইকেল মধুসূদন কলোনি এলাকায়। নিজের দুই ছেলেকে বাড়ির কুয়োতে ছুড়ে ফেলে দিলেন তাদের বাবা। যদিও এলাকাবাসীর তৎপরতায় তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে কিন্তু বাবার এমন কর্মকাণ্ডে স্তম্ভিত স্থানীয় লোকজন থেকে শুরু করে পুলিশ। স্ত্রী জানিয়েছেন তার স্বামী বছর চল্লিশের গৌতম মণ্ডল আদতে মানসিক ভারসাম্যহীন। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটানোর পর তাঁকে আর বাড়িতে রাখতে রাজি হননি স্ত্রী। গৌতম মন্ডল কে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার পরিবার। শুক্রবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাইকেল মধুসূদন কলোনি এলাকায় মারাত্মক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
রুপা মন্ডল, তিনি গৌতমের স্ত্রী, তার মতে তার স্বামী বেশ অনেকদিন ধরেই মানসিক ভরসাম্যহীন। তিনি খুব কষ্টে বিভিন্ন বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে স্বামীর যাবতীয় চিকিৎসার খরচা চালান। অনেক সময় তার স্বামী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে অনেকটাই উত্তেজিত হয়ে পড়েন। সেই সময় যাকেই দেখতে পান তাকেই মারতে তেড়ে যান। এমনকি তাকেও অনেক সময় তার স্বামী মারধর করেছেন, এমনটাই দাবী করেছেন রুপা। এর আগে যখন এরকম সমস্যা হতো তখন তিনি পুনঃনির্বাসন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিতেন স্বামীকে। কিন্তু কয়েকদিন আগে তাকে বাড়ি ফেরানো হয়েছিল।
পারিবারিক সূত্রে জানা যাচ্ছে, সেদিন তার দুই ছেলেকে বাড়িতে রেখেই পরিচারিকার কাজ করতে বেরিয়ে যান। সেই সময় গৌতম বাবু তার ছেলেদের বাড়িতে একা পেয়ে বাড়ির কুঁয়োর মধ্যে ফেলেদেন। কিন্তু একটুপরেই রুপা দেবী বাড়িতে ফিরে আসেন এবং ছেলে দের আর্তনাদ শুনতে পান কুঁয়োর মধ্যে থেকে। তিনি চিৎকার করতে থাকেন ছেলেদের হারানোর ভয়ে। প্রতিবেশীরা এই চিৎকার শুনে সাথে সাথে ছুটে আসেন বাড়িতে এবং ওই দুই ছেলে কে উদ্ধার করেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে এখন তারা দুজনেই সুস্থ আছেন। রূপা দেবী জানান, তাকেও কুয়োতে ফেলে দিয়েছিলেন তার স্বামী এর আগে। তবে এদিনের ঘটনায় স্বামীকে স্থানীয় পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করেন তিনি বড় বিপদের আশঙ্কায়।