দীর্ঘ কুড়ি বছরের দাম্পত্য জীবন। স্বামী স্ত্রীর একসাথে রয়েছে দু’টি সন্তানও। কিন্তু তা সত্বেও যেন কোথা থেকে নেমে এল দাম্পত্য বিবাদের কালো ছায়া। স্ত্রী নাকি জড়িয়েছে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে। আর সেই কারণেই পথের কাঁটা দূর করতে স্বামীকে বিষ প্রয়োগে মেরে ফেলেছেন তিনি। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই কার্যত রণক্ষেত্র এর আকার নিল চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগর।
বিষক্রিয়ায় মৃত ব্যক্তির নাম সুশান্ত মিস্ত্রি। বয়স বছর চল্লিশ। চুঁচুড়ার রবীন্দ্র নগর চারের গোড়া পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা সুশান্ত বাবু। সূত্র অনুযায়ী, সুশান্তবাবুর সাথে কুড়ি বছর আগে বিয়ে হয় সাথীদেবীর। তাঁদের দুই মেয়ে রয়েছে। কিন্তু সাথী দেবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ বেশ কিছুদিন আগে তিনি পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে পড়েন। তার এই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরে নাকি অশান্তি লেগেই থাকত সংসারে। দিন সাতেক আগে সেই দাম্পত্য বিবাদ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে সুশান্তবাবু নাকি সাথীদেবীর গায়েও হাত তুলতেন। অভিযোগ, গত বুধবার সাথীর একটি বিয়েবাড়ির নেমতন্ন ছিল। বিয়ে বাড়ি যাওয়ার আগে তিনি নাকি স্বামীকে বিষ খাইয়ে ঘরে তালা দিয়ে বিয়েবাড়িতে চলে যান। অবশ্য পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের পর সন্দেহ দাম্পত্য জীবনে অশান্তির জন্য সুশান্তবাবু নিজেই বিষ খেয়েছিলেন।
রবিবার সুশান্তবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চুঁচুড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা আরজিকর হাসপাতালে। সেখানেই বুধবার বিকালবেলা সুশান্তবাবুর মৃত্যু হয়। তার মারা যাবার খবর পাড়ায় পৌঁছতেই চারের গোরার এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে পড়ে। বহু মানুষ একত্রিত হয়ে বাড়ী ঘিরে ফেলে। মৃত সুশান্তবাবুর স্ত্রী ও শ্বশুর শাশুড়ির বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। খবর পেয়ে চুঁচুড়া থানার পুলিশ পৌঁছায় ঘটনাস্থলে। পুলিশ এলে পুলিশকে ঘিরেও চলে বিক্ষোভ। ওঠে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি।
পুলিশের বুঝিয়ে জনতা কে শান্ত করে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সুশান্তবাবুর শ্বশুর শাশুড়ি কে আটক করে পুলিশ। অবশ্য সাথী দেবীর বাবা দেপাল কুলু জানান, “জামাই এর মদ্যপান জনিত কারণে অশান্তি হত মেয়ের সঙ্গে। মেয়ের কারও সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল বলে জানি না। জানলে প্রশ্রয় দিতাম না। জামাই নিজেই ঘাস মারা বিষ খেয়েছিল। বাড়িতে কিছু বলেনি। কয়েকদিন পরে বাড়িতে জানালে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়।”
